মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বিজয়নগরে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনে করতে সীমাহীন ভোগান্তি

প্রকাশিতঃ ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪  

নিজস্ব প্রতিবেদক,জন্ম নিবন্ধন একটি অত্যাবশকীয় কাগজ।বাংলাদেশী সকল নাগরিকদের জন্যে জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক, বাঁচ্চাদের স্কুল ভর্তি থেকে শুরু করে এমন কোন কাজ নেই যা-জন্ম নিবন্ধন ব্যতিত হতে পারে। এক কথায় জন্ম নিবন্ধন ব্যতীত সবকিছুই অচল। এন আইডি কার্ড তৈরিতে, বিদেশ গমনে পাসপোর্ট করতে, এনআইডি কার্ডে যেকোন রকম সংশোধন পরিবর্তন পরিবর্ধনের প্রয়োজনে জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন। কিন্তু জন্ম নিবন্ধনের লাগামহীন ভোগান্তি যেন দেখার কেউ নেই।

নিজের জন্ম নিবন্ধন করতে বাপ-দাদার জন্ম নিবন্ধন তৈরিতে হয়রানি পোহাতে হয় মসের পর মাস, অনেক যায়গায় দৌড়ঝাঁপ করে অনেক ডকুমেন্ট সংগ্রহ করার পরেও লাইনে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা শেষে তারপরও জন্ম নিবন্ধন হয় না। এমন নিরব কাঁন্না কারো চোখে পড়ে না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গত বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর সাড়ে ৩টায় লাইনে দাঁড়ানো ভুক্তভোগীরা জানায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অফিসের সামনে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়ানো শুরু করে অপেক্ষা সন্ধ্যা অবধি। অনেক মায়েদের দুধের বাঁচ্চা নিয়েও দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায়। ছোট বাঁচ্চাদের চিল্লাচিল্লি চেঁচামেচিতে ভারী এলাকার পরিবেশ। সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের কাঞ্চনপুর গ্রামের আলী আকবর ও বকুল বেগমের ছেলে সাইমন(৩০) নামের এক প্রবাসী সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত তার জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংশোধন করার চেষ্টা করেন, বার বার চেষ্টা করে সংশোধন করতে না পেরে তিনি এক পর্যায়ে কাঁন্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং বিকাল সাড়ে ৩ টায় তার হাতে থাকা জন্ম নিবন্ধনের সব ডকুমেন্টস ছিঁড়ে উপজেলার পরিষদের মাঠে ফেলে প্রতিবাদ করে । এরপর কাঁন্না করতে করতে উপজেলা চত্তর ত্যাগ করেন।

এমন খবরে সংবাদকর্মীরা, উপজেলা চত্বরে অনুসন্ধান করে প্রবাসীর ছিড়েঁ ফেলে দেওয়া কাগজপত্র খুঁজে পায় এবং ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়। এছাড়াও আরো একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থেকে আসা সনাতন ধর্মাবলম্বী এক মহিলা অভিযোগ করেন, অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের সব কিছু সঠিক থাকার পরেও শুধু মাত্র হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধনে নামের শেষে একটা পদবীর বানানে ভুল থাকায় তার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে না দিয়ে তাহাকে ফেরত দেওয়া হয়। তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত একবার ইউএনও অফিস আর একবার সিএ কাছে দৌঁড়ঝাপের পরেও ব্যর্থ হয়ে মনে ক্ষোভ নিয়ে ফিরে যাচ্ছিলো,তিনি আরো বলেন ভগবান যেনো আর কোনদিন এই ইউএনও অফিসে না পাঠায়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগে ইউএনও অফিসে গেলে, এর সত্যতা পাওয়া যায়, সেইখানে দেখা যায় বিকাল ৪ টায় নারী পুরুষদের বিশাল লম্বা লাইন। একটা স্বাধীন দেশে নাগরিক নিবন্ধনে এমন ভোগান্তি বিশ্বে বিরল, সরকারের অব্যবস্থাপনা এবং সাধারণ জনগণের প্রতি অবহেলা ছাড়া আর কিছুই নয়। এমন ভোগান্তির অবসান চায় ভুক্তভোগীরা।

এ বিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ রাসেল খন্দকার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, জন্ম নিবন্ধন আবেদনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুমোদন দিয়ে থাকেন,তাই ইউএনও এর এপ্রোভাল ছাড়া।আমি চাইলেও কাউকে দ্রুত কাজ করে দিতে পারিনা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন,জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংশোধনে ভোগান্তি ও প্রবাসী সাইমন জন্ম নিবন্ধনের সব ডকুমেন্টস ছিড়েঁ ফেলে দেওয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই এবং এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি।