দুই হাতে জোড়া পিস্তল নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করা রুবেল ৫ দিনের রিমান্ডে
প্রকাশিতঃ ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
সোনার বাংলা ৭১ রিপোর্ট, রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দুই হাতে জোড়া পিস্তল নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করা শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা জহিরুল হক রুবেলকে (৪১) পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এর বিচারক মো: ফয়সল তারেক শিক্ষার্থী আলী রায়হান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এ রিমান্ড মঞ্জুর করা করেন।
এর আগে রোববার সকালে নিহত শিক্ষার্থী আলী রায়হান হত্যা মামলায় রুবেলকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। এসময় ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানান। পরে শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ গণমাধ্যমকে জানান, কুমিল্লা থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করে র্যাব সদস্যরা। এরপর শনিবার গভীর রাতে তাকে রাজশাহীতে আনা হয়। ওই রাতে রুবেলকে র্যাব হেফাজতেই রাখা হয়। সেখান থেকে রোববার সকালে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ তাকে গ্রহণ করে। এরপর ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা আলী রায়হান হত্যা মামলায় রুবেলকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওসি জানান, রুবেলের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী আলী রায়হান ও সাকিব আনজুম হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়া সে আরো দুটি মামলার আসামি। তাকে দুটি হত্যাসহ চারটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে র্যাবের হাতে ধরা পড়ে রুবেল। রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে দুই শিক্ষার্থী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সন্ত্রাসী রুবেল।
জহিরুল হক রুবেলের (৪১) বাড়ি রাজশাহী নগরীর চণ্ডিপুর এলাকায়। তিনি ওই এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। সর্বশেষ রুবেল যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন এবং তিনি সাবেক সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের ডান হাত হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন দমনে গত ৫ আগস্ট শীর্ষ সন্ত্রাসী রুবেলই ছিল চালকের আসনে। তার নেত্বত্বেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অন্তত একডজন নেতাকর্মী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেদিন শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়ে। এতে সেখানে দুজন নিহত হন। আর গুলিবিদ্ধ হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। তবে রুবেল আগে থেকেই একটি হত্যা মামলার আসামি ছিল। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনেও মামলা রয়েছে।
সূত্র বলছে, সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে তৎকালীন সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের নির্দেশে একটি শক্তিশালী শুটার বাহিনী গুলিবর্ষণ করে। ওই শুটার বাহিনীর নেতৃত্বে ছিল যুবলীগ নেতা রুবেল। ওই দিন দুপুরে তালাইমারী এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা নগরীর সাহেববাজারের দিকে এগোতে থাকেন। তারা শাহ মখদুম কলেজ এলাকায় পৌঁছলে রুবেলের নেতৃত্বে শুটার বাহিনী নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়ে।