কসবা সীমান্ত হাটে বাংলাদেশ-ভারত জনগণের মিলন মেলায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
প্রকাশিতঃ ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
শালমীন আক্তার -রবিবার (২১ফেব্রুয়ারি) কসবা সীমান্ত হাট ব্যবস্থপনা কমিটির উদ্যোগে ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মিলন মেলায় প্রথমবারের মত যৌথভাবে উদযাপিত হয় মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। সীমান্ত হাট পরিচালনা পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে হাটে অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করা শহীদ মিনারে দুপুর ১২টায় দু‘দেশের কর্মকর্তাগণ ভাষা শহীদদের স্মরণে পুষ্প মÍবক অর্পন করেন। পরে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহীজলা জেলার শাসক (ডিএম) প্রদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন; বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সরাইল রিজিউন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ফজলে আহাম্মেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বেগম লুৎফুর নাহার, ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের সিপাহীজলা জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক দিলীপ কুমার চাকমা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম.এ মাসুদ, কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট মো. আনিছুল হক ভূইয়া, বিজিবির ১২ ব্যাটালিয়ন অধিনায়নক লে. কর্ণেল শেখ ফরহাদ উজ্জামান, ভারতের আগরতলার কবি ও লেখক অধ্যাপক রামেস্বর ভট্টাচার্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক ও কবি মানবর্ধন পাল, ভারতের দুরদর্শন আগরতলার কেন্দ্র পরিচালক জে.এস. পাঠান, কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, পৌর মেয়র মুহাম্মদ ইলিয়াছ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলী আফরোজ, ওর্ কসবা থানা অফিসার ইনচাজ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ।
কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি মো. সোলেমান খান ও বিশালঘর পুর পরিষদের টাউন সুপার ভাইজার প্রণব দেবনাথের পরিচালনায় আলোচনা সভা শেষে দু‘দেশের শিল্পীদের সমন্বয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সংগীত পরিবেশন করেন: ভারতীয় শিল্পী সিপাহী জলা জেলা শাসক প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, গৌর নারায়ণধর, পুষ্পিতা চক্রবর্তী, সুপর্ণা সাহা এবং বাংলাদেশী শিল্পী নবনিতা রায় বর্মণ, পিংকি রায়, আবদুর রউফ, নাইমুল হাসান, সাইমা আলম মীম ও উদিতা খান।
অনুষ্ঠানের সভাপতি সিপাহীজলা জেলা শাসক প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, একুশ আমাদের বাতিঘর, একুশ দুদেশের তথা সারা বিশ্বের অহংকার। তিনি বলেন, অমর একুশ শুধু বাংলাদেশেই উদযাপন করেনি একুশ এখন সারা পৃথিবীতে উদযাপিত হয়। তিনি একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দু’দেশের মানুষের ঐতিহ্যগত মেল বন্ধন ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে সীমান্ত হাটে দু’দেশের মানুষের ভ্রাতৃত্ব বন্ধন সুদৃঢ় করার লক্ষে নানা অনুষ্ঠানাদি আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন।
উল্লেখ্য, সীমান্ত হাটের অনুষ্ঠানে দু’দেশের সাধারণ জনগণ তাদের সীমান্তের দুপাড়ে থাকা আতœীয় স্বজনদেরকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। তারা একে অপরের সুখ দু:খ ভাগ করে নেয়। কাটা তারের বেড়া দমিয়ে রাখতে পারেনি ভারত বাংলাদেশের দু’দেশের মানুষের সংস্কৃতির বন্ধনকে তা আবারো প্রমাণিত হলো কসবা সীমান্ত হাটে। সীমান্ত হাট পরিচালনা পর্ষদ সূত্রে জানা যায়; সীমান্তের ২০৩৯ পিলারের কাছে কসবা পৌর এলাকার তারাপুর এবং ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহীজলা জেলার কমলাসাগর এলাকায় দু‘দেশের সমপরিমাণ ১ একর ৫০ শতক জায়গায় সীমান্ত হাট নির্মাণ হয়েছে।