আমরা চাই শান্তি, ওরা অশান্তি’
প্রকাশিতঃ ২১ জানুয়ারি, ২০১৬
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বানচালের নামে যারা বোমা মেরে ও গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে তাদের কোনো ক্ষমা নেই। খুনি ও বোমাজদের বিচার করব। আমরা চাই শান্তি, ওরা চায় অশান্তি। আওয়ামী লীগ চায় ন্যায় প্রতিষ্ঠা হোক, ওরা চায় লুটপাট করুক।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জামায়াত-বিএনপি নির্বাচন ঠেকাতে মায়ের সামনে মেয়ে, বাবার সামনে ছেলেকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। প্রত্যেক মানুষ হত্যাকারীর বিচার বাংলার মাটিতে করব। যেভাবে আমরা জাতির জনকের খুনিদের বিচার করেছি। আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করছি। পেট্রলবোমা হামলাকারীদের গডফাদারদেরও বিচার করব।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে দেশের উন্নয়ন করে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়লাভ করে আমরা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছি। নৌকা মানে উন্নয়ন, নৌকা মানেই বিজয়, নৌকা মানেই সমৃদ্ধি। উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সকলের সহয়তা চাই। আগামীতে নৌকায় ভোট চাই।
প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত জনতার কাছে এ সময় জানতে চান আগামীতে জনগণ নৌকায় ভোট দেবেন কি-না। এ সময় হ্যাঁ সূচক জবাব এলে প্রধানমন্ত্রী দু’হাত তুলে নৌকায় ভোট দেয়ার অঙ্গিকার চান। পরে লাখো জনতা দুই হাত তুলে নৌকায় ভোট দেয়ার অঙ্গিকার করেন।
তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছেন, সে অনুযায়ী স্বাধীনতার সুফল মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেওয়াই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য।
বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা নির্বাচন বানচালের নামে যেভাবে মানুষ হত্যা করেছিল, সেটা পৃথিবীর ইতিহাসে আর আছে কি না জানি না। কেউ রেহাই পায়নি খালেদার প্রতিহিংসা থেকে। আওয়ামী লীগ এই প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে বিশ্বাস করে।
সিলেটে শিগগিরই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সব বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। বাংলাদেশে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। আওয়ামী লীগই প্রথম এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। দ্রুতই সিলেটে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করব।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, সিলেটে আজ (বৃহস্পতিবার) ২২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। আমরা সিলেট বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক করেছি। এর কাজ আমরা শুরু করেছিলাম, কিন্তু বিএনপি এসে বন্ধ করে দেয়।
“ঢাকা-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালু করেছি। বিমান এখন লন্ডন থেকে সরাসরি সিলেটে আসে। বিমানকে উন্নত করেছি। নতুন ৬টি বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ করব, করেছি। থ্রি-জি চালু করেছি, দ্রুতই ফোর-জি চালু করব।”
তিনি বলেন, দেশে শিক্ষার সম্প্রসারণ হচ্ছে। বিজ্ঞান ও কম্পিউটার শিক্ষার এর মধ্যে অন্যতম। দেড় কোটি মানুষকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। লাখো মানুষকে বিদেশে চাকরির ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেক ছেলে-মেয়ে আজ এগিয়ে যাচ্ছে, কর্মসংস্থান হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এখন আর কেউ বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াবে না। সারা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি, যেন কেউ বসে না থাকে। আমরা বেতন বাড়িয়ে দিয়েছি। কোনো সরকার ১২৩ শতাংশ বেতন বাড়াতে পারেনি, আমরা করেছি।
শিক্ষা খাতের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এক কোটি ২৮ লাখ ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তি এবং উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। এবারও ঠিক সময়ে শিশুদের হাতে হাতে বই পৌঁছে দিয়েছি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লেখাপড়া শিখতে হবে। মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের এগিয়ে যেতে হবে। পড়াশোনা না শিখলে ভবিষ্যতে কোনো কাজে আসবে না। সুযোগ কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাবে।
এর আগে বিকেল ৪টায় জনসভা মঞ্চের পাশে সিলেটের ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পে উদ্বোধন ও ১২টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।