মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষকের পদ গ্রহণ ও অর্থ আত্মসাৎ

প্রকাশিতঃ ২৯ অক্টোবর, ২০২৪  



অপরাধ প্রতিবেদক,

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার উত্তর ছয়ঘড়িয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষকের পদ গ্রহণ করে সফির উদ্দিন আদালত অবমাননাসহ দুর্নীতি ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের করছেন মর্মে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিষয়টিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক সরকার।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে ১৯৯৪ সালে স্থাপিত হয়ে ১ এপ্রিল, ১৯৯৯ তারিখে এমপিও ভুক্ত হয়। পরে ২০০১ সালে মাধ্যমিক স্তর এমপিও ভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মরহুম খন্দকার আব্দুর রহমান এমপিও ভুক্ত হয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে ২০১৮ সালে অবসরে যান। এর মাঝে ২০০৭ সালে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড এক পত্রে আব্দুর রহমানকে অপসারণ করে সফির উদ্দিনকে প্রধান শিক্ষক পদে বহাল করে। ওই পত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট ডিভিশনে ৭৬০১/৯ রীট মামলা করে স্বপদে পুনঃবহাল থেকে চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করে আব্দুর রহমান। এরপর পদচ্যুত সফির উদ্দিন জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ গ্রহণ করে এমপিও ভুক্ত হন।

এদিকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বৈধ প্রধান শিক্ষক অবসরে গেলে ম্যানেজিং কমিটি সিনিয়র শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব দেয়। বিষয়টিতে সফির উদ্দিন ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর জেলা শিক্ষা অফিসের এ পত্রে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের পদে দায়িত্ব নিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ষড়যন্ত্র করে। অপরদিকে গোবিন্দগঞ্জ সাব জজ আদালতে মামলা নং ১৪৭/২০২০ দায়েরে নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আসে যা মিস আপিল ৩৩/২০২০ এ খারিজ হয়। এছাড়া একই আদালতে ১৮৪/২০২০ (অন্য) মামলায় সফির উদ্দিনের সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ বৈধ নয় মর্মে ভারপ্রাপ্ত প্রধান পদে তার প্রতি নিষেধাজ্ঞা দেন। এ মামলাটিও (মিস আপিল ৩৪/২০২০) খারিজ হয়। এদিকে ম্যানেজিং কমিটির ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবরের সিদ্ধান্তের আলোকে বিজ্ঞ আদালত (১৮৪/২০২০ অন্য) আব্দুর রাজ্জাককে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিস্বাক্ষরে বেতন-ভাতা উত্তোলনের আদেশ দেয়। পরে ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর জেলা শিক্ষা অফিসার সরেজমিনে তদন্তে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধানের পদ দুটি শূন্য করে সিনিয়র শিক্ষক খন্দকার জোবাইদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের সুপারিশ করেন। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি থেকে অ্যাডহক কমিটি থাকাকালে পূর্বের একাধিক মামলায় আদালতের আদেশকে অমান্য করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে সফির উদ্দিন অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষকের পদ গ্রহণ করে সহকারী প্রধানের বেতন উত্তোলন করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করছেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক সরকার এর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আসাদুজ্জামানকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন।

এ বিষয়ে সফির উদ্দিন এর সাতে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।