মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

অবৈধ বালু উত্তোলনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপিতে মারামারি,দুটি ড্রেজার জব্দ

প্রকাশিতঃ ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  

অপরাধ প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দখল ও লুটে বরিশালে আলোচনার শীর্ষে রয়েছে মেঘনাবেষ্টিত জনপদ হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা। 
নদী, মাছঘাট, চর, খেয়াঘাট ও লঞ্চঘাট কিছুই দখলে বাকি নেই। এবার নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দলের দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে।
গত শনি ও রোববার রাতে হিজলার পৃথক দুটি স্থানে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। ভাঙচুরের পর জব্দ করা হয় দুটি ড্রেজার। এসব ঘটনার দায় বিএনপির কেউ স্বীকার করছেন না। তবে হিজলার সব দখলের নাটের গুরু হিসেবে উপজেলা আহ্বায়ক আবদুল গাফফার তালুকদার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন খোকন ও সদস্য সচিব মনির দেওয়ানের নাম আলোচিত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সপ্তাহখানেক আগে বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় হিজলার একাধিক পয়েন্টে আবার বালু তোলা শুরু হয়েছে। 
জানা গেছে, রোববার রাতে গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নে মেঘনার শাখা নয়াভাঙ্গুনী নদীর সুলতানপুর ও নাছোকাঠি পয়েন্টে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় একটি ড্রেজার আটক করেছে প্রতিপক্ষ। তার আগের রাতে একই ঘটনা নিয়ে মারামারি হয় হরিনাথপুর ইউনিয়নের চর আবুপুরে। সেখানে আটক করা হয় আরেকটি ড্রেজার।
বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য এক স্থানীয় বাসিন্দা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পৃথক দুটি আবেদন করেছেন। আবেদনে বলা হয়, অবৈধভাবে বালু তোলায় সংলগ্ন গ্রামগুলো নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে। 
আবেদনে বালু উত্তোলনকারী হিসেবে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহসিন সিকদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনির নপ্তি, যুবদলের সদস্য সচিব আমির বাঘা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সজল খান, সম্রাট মোল্লা, সামসুল আলম, হরিনাথপুর ইউনিয়নের সুজন সরদার, সোহেল বিহারী, মিজান বেপারি ও কালাম বেপারির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সজল খান বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট (হিজলাসংলগ্ন মেঘনার অপর তীরের উপজেলা) এলাকার একটি চক্র বালু তোলা শুরু করলে তারা বাধা দিয়ে বালু তোলা বন্ধ করেন। ওই চক্রটিই তাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। একই বক্তব্য দেন আরেক অভিযুক্ত আমির বাঘা। 
হিজলার বাসিন্দা ও বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহ সমকালকে বলেন, অবৈধ বালু তোলা নিয়ে শনিবার রাতে হরিনাথপুরে ঝামেলার কথা শুনেছেন। রোববার রাতের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। শহীদুল্লাহও দাবি করেন, গোসাইরহাটের বালু ব্যবসায়ীরা বালু তুলছে।

স্থানীয় বিএনপির কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে  দোষারূপ করছে। তবে ৫ আগস্টের পর বিএনপি নেতাকর্মীর কিছু কাজ এলাকায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে বলে মন্তব্য করেন এই প্রবীণ নেতা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হিজলায় বালুমহল নেই। তবে গোসাইরহাটের সঙ্গে মেঘনার সীমানা থাকায় কিছু জটিলতা রয়েছে। গোসাইরহাটের বালুমহালের ড্রেজারগুলো সীমানা অতিক্রম করে হিজলা সীমানায় ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ রয়েছে। দু’দিন আগে এসব নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলার কথা তিনি শুনেছেন।