বুধবার ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বেদখল হওয়া  ও অস্তিত্ব সংকটে থাকা ৬২টি খাস পুকুর উদ্ধার

প্রকাশিতঃ ২৩ আগস্ট, ২০২৪  

সোনার বাংলা ৭১ রিপোর্ট,মাদারীপুরের বিভিন্ন উপজেলায় বেদখল হওয়া  ও অস্তিত্ব সংকটে থাকা ৬২টি খাস (সরকারি) পুকুর উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি এসব পুকুর দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করে প্রশাসন। রাজনৈতিক নেতারা দখল করায় ও ভরাট হওয়ায় বিগত বছরগুলোতে এসব পুকুর থেকে রাজস্ববঞ্চিত ছিল সরকার। উদ্ধারের পর খননসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে পুকুর থেকে রাজস্ব আয়ের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। 

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলায় ২৪টি, রাজৈর উপজেলার ৩টি ও ডাসার উপজেলায় ৩৫টি খাস পুকুর রয়েছে। এসব পুকুরের মধ্যে কিছু পুকুর বড় আকারের হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে এগুলো দিঘি হিসেবে পরিচিত। ৬২টি পুকুরে জমির পরিমাণ প্রায় ৫০ একর। এ ছাড়া কিছু জমি আগে খাস তালিকায় থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে রেকর্ড করানো হয়েছে। সেসব জমির রেকর্ড সংশোধন করে খাসের তালিকায় এনে ইজারা দেওয়ার ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মূলত দুই কারণে পুকুর সরকারের বেহাত হয়ে যায়। কিছু পুকুর স্থানীয় রাজনীতিবিদরা প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের দখলে রেখেছিলেন। আর কিছু পুকুর কেউ কেউ সাময়িক বন্দোবস্ত নিয়েছিলেন। পরে ইজারার অর্থ না দিয়ে দখলে রেখে নিজেদের নামে রেকর্ডভুক্ত করেন। এ ছাড়া কিছু পুকুর ভরাট হয়ে যাওয়ায় সেগুলো ইজারা দেওয়ার অযোগ্য ছিল। যেসব পুকুর ভরাট হয়ে গেছে, সেসব পুকুরে সবজিসহ নানা ধরনের আবাদ করছেন কেউ কেউ। দীর্ঘদিন বিভিন্ন কারণে এসব পুকুর উদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে না পারলেও পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বর্তমানে পুকুরগুলো জেলা প্রশাসনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এসব পুকুর ইজারা নিতে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সঠিক নিয়মে ইজারা দিলে পুকুরগুলো থেকে প্রতি বছর প্রচুর রাজস্ব পাবে সরকার।

সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম খাগছাড়া গ্রামের মনোয়ার হোসেন নামে এক যুবক বলেন, সরকার স্থানীয় দিঘিটি (পুকুর) দখলমুক্ত করায় তিনি সেটি ইজারা নিয়ে মাছ চাষের কথা ভাবছেন। এতে নিজের আর্থিক সচ্ছলতা আসার পাশাপাশি এলাকার কিছু বেকার ছেলেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।
ডাসার উপজেলার পান্তাপাড়া এলাকার রুহুল আমিন বলেন, সরকারি পুকুর কখন ইজারা দেওয়া হয়, এলাকার কেউ জানতেও পারে না। যারা ভোগদখলে আছে, তারা এসব পুকুরের সঠিক ব্যবহার করেন না। 

মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঝোটন চন্দ বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় থাকা সরকারি পুকুর দখলমুক্ত করে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এসব পুকুর ইজারা দেওয়া হলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে। 

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. মারুফুর রশিদ খান বলেন, বেদখল থাকা অনেকগুলো সরকারি পুকুর উদ্ধার হয়েছে। সেখানে জমির পরিমাণ প্রায় ৫০ একর। এ ছাড়া কিছু পুকুরের জমি আগে খাস তালিকায় থাকলেও বিভিন্নভাবে ব্যক্তির নামে রেকর্ড করানো হয়েছে। সেসব জমির রেকর্ড সংশোধন করে খাসের তালিকায় এনে সেগুলো ইজারা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।