টেকনাফে স্থানীয়দের বাড়িতে রোহিঙ্গাদের ডাকাতি, সংঘর্ষ-গুলি
প্রকাশিতঃ ২১ আগস্ট, ২০২৪
বিশেষ প্রতিনিধি,কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় স্থানীয়দের বাড়িতে রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তরা ডাকাতি করেছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দিবাগত রাতে উপজেলার নয়াপাড়া মোছনী রেজিস্টার্ড ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানীয়দের বাড়িতে ডাকাতি করা হয়। এ সময় দুইজনকে অপহরণের পর বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে সাড়ে ৫ লাখ টাকার মুক্তিপণে ছেড়ে দেয়। তাদের শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, মঙ্গলবার রাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মোছনী নিবন্ধিত ক্যাম্প সংলগ্ন দুদু মিয়ার বাড়িতে ডাকাতি করা হয়। এ সময় দুদু মিয়াসহ নারীদের এলোপাতাড়ি মারধর করে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। একইসঙ্গে তার দুই ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহৃতরা হলেন, দুদু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ তারেক (২২) ও মোহাম্মদ রাসেল (২০)।
স্থানীয়রা জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানীয়দের বাড়িতে ডাকাতি করা হয়। ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে অপহৃতদের উদ্ধারে জনতা একত্রিত হলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থেকে ইটপাটকেল ও গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। এ সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা এপিবিএন পুলিশও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ইটের আঘাতে মোছনী গ্রামের শাহরিয়ার নাফিস জয় ও লোকমান হাকিমসহ কয়েকজন আহত হয়।
বুধবার সকালে সাড়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণে অপহৃত দুইজনকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানায় ভুক্তভোগী পরিবার। তবে তাদের নির্যাতন করা হয়েছে। পরে তাদের এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ডাকাতি, অপহরণ ও রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তরা স্থানীয়দের উপর গুলি ছোড়ায় উত্তেজিত জনতা কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক অবরোধ করে। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান করে শত শত মানুষ। এ অবরোধ সকাল সাড়ে ৭টা থেকে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা চলে। এ সময় শত শত যাত্রী ভোগান্তির শিকার হয়। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আলী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে সান্ত্বনা দিয়ে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে।
মোহাম্মদ আলী বলেন, কিছু স্বশস্ত্র রোহিঙ্গা স্থানীয় দুইজনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে এবং নির্যাতন চালায়। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে সড়ক অবরোধ করে। তারা অভিযুক্ত রোহিঙ্গাদের আটক ও এলাকায় নিরাপত্তার দাবি জানান।
স্থানীয়দের বরাতে ওই ক্যাম্পের ইনচার্জ হান্নান সরকার বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য এপিবিএন পুলিশ ক্যাম্পে টহলে রয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী জানান, অপহরণ ও সড়ক অবরোধ বিষয়ে তারা অবগত হয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছেন তিনি।