আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভাঙচুর-লুটপাট
প্রকাশিতঃ ১১ আগস্ট, ২০২৪
সোনার বাংলা ৭১ রিপোর্ট, আমডা তো গরিব মানুষ। নিজের কোনো জাগা-জমি নাই। মাইনসের বাড়িত কাম কাজ কইরা কোনো রহম খাইয়া না খাইয়া চলি। বউ-বাইচ্চা নিয়া অনেক কষ্টে অন্যের বাড়িত থাকতাম। গরিব দিক্কাই তো সরহার জাগা আর ঘর কইরা দিছিল। হেই দিন কামে গেছিলাম। বউ বাইচ্চা গেছিন বাড়িতে। সন্ধ্যার আগে আশপাশের অনেক মানুষ আমার ঘরটা ভাইঙ্গা ফালাইছে। চকি, ফ্যান, দেড় মণ চালসহ সবকিছু নিয়া গেছে। পাশের ঘরে মাজেদাও কামে গেছিল।
তাইর ঘরটাও ভাইঙ্গা সব লুট করছে। আমডার অতো বড় ক্ষতি কেন করলো? অহন দয়া কইরা ছোট ভাই জসিম জাগা দিছে। বউ বাইচ্চা ওইহান আছে। ক’দিন আর থাকতে দিবো। এরপর কই যামু? তাহুম কই? কি করুম? বৃষ্টিত ভিইজ্জা ধান কাটতাছি। ভাবতাছি রাইতে যাইয়া ঘুমামো কই? কেউ কি অহন আমডার একটা কিছু কইরা সায্য করবো?’ কথাগুলো বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বুড্ডা গ্রামের পশ্চিম পাড়ার মসজিদের সামনের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা জয়নাল মিয়া। জয়নাল একই ইউনিয়নের আঁখিতারা গ্রামের আরজ আলীর ছেলে। ভুক্তভোগী জয়নাল ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুড্ডা গ্রামের ওই স্থানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৬টি ঘর ৬ জন ভূমি ও গৃহহীন নারী-পুরুষকে দেয়া হয়েছে। জয়নাল এখানকার আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিনামূল্যে জায়গা ও ঘর পেয়ে বসবাস করে আসছেন। গত ৫ই আগস্ট সন্ধ্যার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে একদল লোক লাঠিসোটা হাতে ওই প্রকল্পে হামলা চালায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন জয়নাল ও মাজেদার ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। দু’টি ঘরের সকল জিনিসপত্র নিয়ে যায় হামলাকারীরা। জয়নাল ও মাজেদা কাজ করতে অন্যত্র গিয়েছিলেন। জয়নাল বলেন, আমার ও মাজেদার ঘর ২টির দেয়াল ভাঙচুর করে পরনের লুঙ্গিসহ সকল মালামাল নিয়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক লোক বলেন, অজপাড়া গাঁয়ের গরিব লোকদের বসবাসের ঘর ভাঙচুর লুটপাট মোটেও ভালো কাজ নয়। চোখ দিয়ে তাণ্ডবটা শুধু দেখলাম। কারণ পরিস্থিতি তো অন্যরকম ছিল। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রতিবাদ বা প্রতিহত করতে পারিনি।