সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

শর্ত মেনে সরকারী গুদামে ধান বিক্রিতে কৃষকের অনাগ্রহ

প্রকাশিতঃ ৩০ জুন, ২০২৪  

সোনার বাংলা৭১.কমকে ধান সমৃদ্ধ খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা শেরপুর। কৃষকদের ন্যায্য মুল্য ও খাদ্য মজুদ নিশ্চিত করতে সারা দেশের ন্যায় এখানেও সরকারি ভাবে কৃষকের কাছ থেকে বোর ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে।

মিল মালিকদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত চাল পাওয়া গেলেও সরকারি কঠিন সিদ্ধান্ত মেনে গুদামে ধান দিতে কৃষকের আগ্রহ কম।সরকারি গুদাম গুলোতে ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।তবে সরকার প্রতিমণ ধানের দাম ১২৮০ টাকা নির্ধারণ করায় বাজারে ধানের দাম কিছুটা বেড়েছে।এর সুফল পরোক্ষ ভাবে কৃষকরা পাচ্ছেন বলে খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে।

খাদ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে সরকারি গুদামে ধান দিলে কমপক্ষে আর্দ্রতা থাকতে হবে শতকরা ১৪,সর্বোচ্চ এক হাজার ধানে চিটা ও বিজাতীয় পদার্থের পরিমান হতে হবে পাঁচটি,অপুষ্ঠ ও বিনিষ্ঠ ধান শতকরা দুইটি,ভিন্নদানের মিশ্রন শতকরা আটটি।

কৃষক সূত্র জানিয়েছে, এত সব কঠিন শর্তের বেড়াঝালে কৃষক পর্যায় থেকে ধান দেওয়া জটিল ও ঝামেলা পূর্ণ। মাটিতে ধান শুকিয়ে কোন অবস্থাতেই ধানের আর্দ্রতা ১৪ আনা সম্ভব না। সরকারের অন্য শর্ত গুলো পূরণ করতে শ্রমিক আর পরিশ্রমের মুল্য সরকারি মুল্যের চেয়ে বেশী পড়ে যায়। তার উপর আবার পরিবহনে করে ধান নিয়ে গুদামে আসা, আবার ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়া মহা ঝামেলা।

সরকারি মুল্য মণ প্রতি ১২৮০ টাকা হলেও পোষাচ্ছে না।কৃষকরা বাড়ী থেকেই কোন ঝামেলা ছাড়াই প্রতি মণ ১১০০ টাকার বেশী দরে বিক্রি করে দিচ্ছে।১১০০ টাকা মুল্যের ধান চাতালের খলা ভাড়া করে,শ্রমিক খরচ করে চিটা, অপুষ্ঠ, মিশ্রন ধান সরিয়ে তারপর ওই ঝুঁকি ঝামেলা শেষ করে তারপর ১২৮০ টাকা পাওয়া যায়। এতে কোন লাভ হয় না উপরন্ত ঝামেলা ও কষ্ঠ পোহাতে হয়।তবে শর্ত মেনে গুদামে ধান দিলে গুদাম ব্যবস্থাপনায় ঝামেলা আগের চেয়ে অনেক কমেছে।

খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে গত ৭মে থেকে এই সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে।চলবে আগামি ৩১ আগষ্ঠ পর্যন্ত। জেলার পাচঁটি উপজেলায় মোট ধান সংগ্রহের লক্ষমাত্রা ১০হাজার ৩৬৬ মেঃটন। লটারিতে বিজয়ি জেলার ৩৪৫৫জন কৃষক তিন টন করে ওই ধান সরকারকে সরবরাহ করার কথা।সর্বশেষ ২৫জুন পর্যন্ত ধান পাওয়া গেছে মোট ২০২৫ মেঃটন। লক্ষ্যমাত্র অর্জনের হার শতকরা ২৩.৪০ ভাগ।

সূত্র আরও জানায়, প্রথম দিকে ধানের দাম কিছুটা কম থাকায় গুটি কয়েক কৃষক ধান দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। এখন কোন কোন গুদামে প্রতিদিন ২/১জন কৃষক ধান নিয়ে আসে তবে কদিন পর এটাও ফিকে হয়ে যাবে। খাদ্য বিভাগ সংকট কাটাতে লটারির বাইরের কৃষকদেরও আহবান করতে পারে এমন একটি ধারনা পাওয়া গেছে।

তাতেও সংকট কতটুকু কাটবে না এমন দাবী করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাদ্য বিভাগের কেউকেউ বলেছেন লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ৪০ভাগ ধান পাওয়া কষ্ঠ হবে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হক ভূঁইয়া বলেছেন সরকারি শর্ত মেনে কৃষক হয়রাণি জিরো টলারেন্স থাকবে।ধান সংগ্রহে জেলা কাদ্য বিভাগ চেষ্ঠা করে যাবে।