সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ফসলি জমিতে বালু রাখতে নিষেধ করায় প্রাণনাশের হুমকি

প্রকাশিতঃ ১০ মার্চ, ২০২৪  

জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে নিয়ম না মেনে নদী খনন করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ কৃষক। ফসলি জমিতে বালু রাখতে নিষেধ করায় প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।  

জানা গেছে, ঝাটিবেলাই ফুলজোড় নদী খনন প্রকল্পের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আয়ান কন্সট্রাকশন। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মো. ইউসুফ, ভদ্রঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম মণ্ডল, ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন তালুকদার, সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার তালুকদারসহ আরও বেশ কয়েকজনের নেতৃত্বে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে সাধারণ কৃষকদের জমিতে স্তূপ করে রাখা হয়। ফসলি জমিতে বালু রাখতে নিষেধ করলে কৃষকদের গুম ও প্রাণনাশের হুমকি দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. ইউসুফসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। ফসলি জমিতে বালু রাখায় প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাঙালী, করতোয়া, ফুলজোড় ও হুড়াসাগর নদী মূলত ২০ ইঞ্চি হাইড্রোলিক ড্রেজার দিয়ে খনন করার নিয়ম থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আয়ান কন্সট্রাকশন ১২ ইঞ্চি বাংলা ড্রেজারের মাধ্যমে নদী খনন করে আসছে। বাংলা ড্রেজার দিয়ে নদী খনন করায় নদীর দুই পাড়ে ফসলি জমি নদীতে বিলীন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা। এ ছাড়াও নদীর পাশের সড়কের মাটি ধসে যাওয়ায় হুমকির মুখে কামারখন্দ-নলকা সড়কসহ নানা স্থাপনা।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ঝাটিবেলাই এলাকায় ফুলজোড় নদী খননের উত্তোলিত বালুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে, ফুলজোড় নদী খনন প্রকল্পে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় স্থানীয় প্রশাসন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে নদী খনন করায় সড়ক ধসে যাওয়ার ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে অবগত করেছেন। তবে ধসে যাওয়া সড়কটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেকর্ডে নেই। সড়কটির ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগই ব্যবস্থা নিতে পারবে।

কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমা খাতুন জানান, ফুলজোড় নদী খনন প্রকল্পে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে নদী খনন করা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঐ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে নদী খনন করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর আগে সড়কের উপর বালু সঞ্চালনের পাইপ বসিয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ইউসুফকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।