মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বিনা ছুটিতে পরিবার কল্যাণ সহকারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত

প্রকাশিতঃ ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪  

সোনার বাংলা ৭১ ডেস্ক:ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় জেসমিন আরা খাতুন নামে এক পরিবার কল্যাণ সহকারী বিনা ছুটিতে ২১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে কাপাশহাটিয়া ২/খ ইউনিটে কর্মরত আছেন। এদিকে বিনা ছুটিতে ও দাপ্তরিক অনাপত্তি নিয়ে ভারতে গমন করার কথা নিজেই ফাঁস করে বিপাকে পড়েছেন জেসমিন। এ ঘটনা নিয়ে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠনের পর জেসমিন ও তার স্বজনরা তদন্ত কর্মকর্তা ডা. তানিয়া আক্তার তৃৃপ্তিকে মোবাইল ফোনে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।  

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নাছরিন জানান, গত বছরের ডিসেম্বরে জেসমিন আরা আমার কাছে ছুটির জন্য আসেন। কিন্তু সামনে জাতীয় নির্বাচন হওয়ায় তার ছুটি প্রদানের কোনো বিধান ছিল না। এরপর তিনি কোনো আবেদন ছাড়াই ২১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি দুটি পাক্ষিক সভায় অংশগ্রহণ করেননি এবং এক মাসে তার মাসিক রিপোর্টও দেননি।

 বিষয়টি কাপাশহাটিয়া ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ফিল্ড ভিজিট করে প্রতিবেদন দিলে তাকেও মুঠোফোনে ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে হুমকি প্রদান করেন জেসমিন এবং তার স্বামী জাহিদ। এরপর শুনেছি তিনি আমার বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ করেছেন এবং হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে ছুটি নিয়ে ভারতে গেছেন বলেও পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে।

কিন্তু হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার হোসেন জেসমিনকে ভারতে যাবার জন্য কোনো ছুটি দেননি বলে আমাকে  জানিয়েছেন। নাছরিন আরও জানান, পুরো বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১০ই অক্টোবর জেসমিন ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বোর্ডে আসেন। একজন সিনিয়র স্টাফ নার্সের উপস্থিতিতে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে চাইলে তিনি রাজি হননি। 

তবে তিনি রোগের লক্ষণ বর্ণনায় বলেছেন, তার স্তনে তীব্র জ্বালাপোড়া হচ্ছে, কিন্তু কোনো প্রকার টিউমার জাতীয় রোগের কথা উল্লেখ করেননি এবং এ সংক্রান্ত কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকেও দেখাননি। এ অবস্থায় জেসমিনকে দেশের মধ্যে কোনো স্তন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেন ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে গঠিত মেডিকেল বোর্ড। মেডিকেল বোর্ডে সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ, জুনিয়র কন্সালটেন্ট ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান ও সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা ইয়াসমিন। বিষয়টি ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস গত বছরের ১০ই অক্টোবর ১৮৫৪নং স্মারকে উপ-পরিচালক, ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে জানানো হয়। পরিবার কল্যাণ সহকারী  জেসমিন আরা জানান, ‘২০২৩ সালের জুন মাস থেকে আমি অসুস্থ। তখন থেকেই ছুটি চাচ্ছি কিন্তু দেয়নি। আমি একজন ক্যান্সার রোগী। দয়া করে যদি পারেন, আপনারা আমার জন্য ছুটির ব্যবস্থা করুন, যাতে আমি  দ্রুত চিকিৎসা নিতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যা হচ্ছে সবই অপপ্রচার। আমি কাউকে হুমকি দেয়নি। আমি সবার কাছে ন্যায়বিচার চাই।’ এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. মোজাম্মেল হক জানান, তার দপ্তরে জেসমিনের কোনো ছুটির আবেদন নেই। তবে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে জেসমিনের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।