সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

নড়াইলের ভাষা সৈনিক রিজিয়া খাতুন আর নেই

প্রকাশিতঃ ১৮ জানুয়ারি, ২০২৪  

বিশেষ প্রতিনিধি, নড়াইলের ভাষা সৈনিক রিজিয়া খাতুন মারা গেছেন (ইন্না-লিল্লাহী ওয়া ইন্না-ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে নড়াইল শহরের নিজ বাসায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এদিন বাদ আসর নামাজে জানাজা শেষে নড়াইল শহরের আলাদাতপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

রাজিয়া খাতুনের ছেলে রাসেল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভাষা সৈনিক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা রিজিয়া খাতুন নড়াইল শহরের মহিষখোলা এলাকার মরহুম অ্যাডভোকেট আ. রাজ্জাকের স্ত্রী। তিনি মৃত্যুকালে তিন ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। রিজিয়া খাতুনের কফিনে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ, পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।

জানা যায়, ১৯৩১ সালের ১৫ জানুয়ারি এই ভাষা সৈনিকের জন্ম বর্তমান নড়াইল পৌরসভার ডুমুরতলা গ্রামে। তার বাবার নাম নুর জালাল। রিজিয়া খাতুন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের একজন অগ্রজ সৈনিক ছিলেন। ভাষা আন্দোলন শুরু হলে সবার মতো তিনিও রাস্তায় নেমে আসেন। তখন তিনি ছিলেন শহরের দিলরুবা গার্লস হাই স্কুলের (বর্তমান নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) ছাত্রী। অন্যান্য সহপাঠীদের সঙ্গে মিছিল মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতেন। মেয়েদের মধ্যে মিছিলে নেতৃত্ব দিতেন সুফিয়া খাতুন, রিজিয়া খাতুন ও রুবি বেগম।

২১ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গুলিবর্ষণের খবর সন্ধ্যায় নড়াইলে পৌঁছালে ওই রাতেই অন্যান্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রিজিয়া খাতুন নড়াইল পৌর পার্কের কালিদাস ট্যাংকের পাড়ে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন এবং সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ভাষা আন্দোলনে তার অবদান স্থানীয়ভাবে স্বীকৃত হলেও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃতি পাননি তিনি। জীবিত অবস্থায় তার শেষ ইচ্ছা ছিল ভাষা সৈনিক হিসেবে সরকারের স্বীকৃতি। সেই আক্ষেপ নিয়ে পরপারে পাড়ি জমালেন তিনি।