ড্রেজার দিয়ে ফসলি জমির বালু উত্তোলন
প্রকাশিতঃ ১৪ নভেম্বর, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পাকরাইল গ্রামে ফসলি জমির মাঠে পুকুর তৈরি করা হয়েছে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে পুকুর বানানোর পর সেখানে আবার ড্রেজার মেশিন বাসিয়ে প্রকাশ্যে তোলা হচ্ছে বালু। দিনরাত বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙছে তীর। এতে পার্শ্ববর্তী জমি ও বাড়ি ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে প্রবল। কিন্তু বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা বাধা দেওয়ার সাহস করছে না।
জানা যায়, উপজেলার কাজিরবেড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়ানবী পাকরাইল গ্রামের নওশের আলীর পুকুরে দুটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার কারণে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি ও বসতবাড়ি ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এতে বালু উত্তোলনকারীরা লাভবান হলেও ক্ষতির মুখে পড়বেন পুকুরের আশপাশে থাকা বাড়ি ও জমির মালিকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাকরাইল গ্রামের নওশের আলীর পুকুরে দুটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নির্বিঘ্নে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। লম্বা পাইপের সাহায্যে ওই বালু রাস্তার পাশের একটি পুকুরে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। অন্য একটি পাইপের সাহায্যে সেচ পাম্প থেকে পানি দেওয়া হচ্ছে বালুর গর্তে। দিনে ও রাতে সমান তালে লাগামহীনভাবে বালু উত্তোলনে ব্যস্ত শ্রমিকরা।
পুকুর মালিক নওশের আলী জানান, ওই পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় মাছের চাষ করা যাচ্ছে না। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়ানবী পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করার কথা বলায় আমি রাজি হয়ে যাই। কারণ মাছ চাষ করার জন্য পুকুরটি কেটে গভীরতা বাড়ানোর দরকার ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী জানায়, ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটির নিচের বালু উত্তোলন করার কারণে পার্শ্ববর্তী মাঠের ফসলের জমি ও আশপাশের বসতবাড়ি ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান এলাকাবাসী।
অভিযুক্ত কাজিরবেড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়ানবী বলেন, ‘পাকরাইল গ্রামের রাস্তা পাকা করার কাজের জন্য বালু পাওয়া যাচ্ছে না। বালু না পাওয়ায় রাস্তার কাজ করতে পারছেন না ঠিকাদার। ওই গ্রামের নওশের আলীর পুকুরে পানি থাকে না, তাই তার পুকুর থেকে বালু তুলে রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে বলেছি।’
এ ব্যাপারে মহেশপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরিফ শাওন বলেন, ‘কাজিরবেড় ইউনিয়নের কাউকে বালু তোলার কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। অবৈধভাবে কেউ বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’