স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপ, স্বামী গ্রেফতার
প্রকাশিতঃ ২৫ আগস্ট, ২০২৩
অনলাইন ডেস্ক:মাদারীপুর জেলার শিবচরে প্রাক্তন স্ত্রীর বিয়ের খবরে অ্যাসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত সুমন শিকদারকে গ্রেপ্তার করেছে মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাসুদ আলম। এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরচর এলাকা থেকে সুমন শিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়ানো ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ায় স্বামী সুমন শিকদারকে তালাক দেন স্ত্রী সাদিয়া আক্তার। এর কিছুদিন পর অন্যত্র বিয়েও ঠিক হয়ে যায় তার। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন প্রাক্তন স্বামী সুমন শিকদার। প্রতিশোধ নিতে তিনি অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে দেন সাবেক স্ত্রী সাদিয়ার মুখ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানায়, প্রেমের সম্পর্কে ৪ বছর আগে শিবচর উপজেলার মাদবরের চর এলাকার সিরাজ শিকদারের ছেলে সুমন শিকদারের সঙ্গে বিয়ে হয় একই এলাকার লিটু হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়া আক্তারের। তাদের ঘরে এক শিশু কন্যা সন্তানও আছে। সংসার জীবনের শুরু থেকেই সুমনের কাজে অনীহা ও মাদকসেবী হওয়ার কারণে সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। একপর্যায়ে সাদিয়া তাকে তালাক দিয়ে দেন এবং তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়।
একথা জানতে পেরে সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। পরে গত ১৬ আগস্ট (বুধবার) রাত ১০টার দিকে সুমন সাদিয়ার মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মারেন। এসিডে সাদিয়ার মাথা, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মকভাবে ঝলসে যায়। পরে স্বজনরা সাদিয়াকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার করেন। বর্তমানে সাদিয়া সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পুলিশ সুপার মাসুদ আলম আরও বলেন, এ ঘটনায় পরের দিন সকালে ভুক্তভোগী সাদিয়া আক্তারের বোন তাছলিমা আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় একটি অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। ঘটনার পর পর গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত সুমন শিকদার। ঘটনার পর তদন্তে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে শরীয়তপুরের জাজিরার মাঝিরচর হতে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এছাড়াও তার সঙ্গে আরও কয়েকজন সহযোগী ছিল বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। তাদের ধরতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।
মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এ এম ফরহাদ রাহী মীর বলেন, মামলা নেওয়ার পর আমরা অভিযান পরিচালনা করে শিবচর ও জাজিরা পুলিশের সহায়তায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তবে তিনি তার ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধসহ নানা কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। এতে তাকে গ্রেপ্তার করতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছিল।