নরসিংদীতে নির্বাচনী সহিংসতায় ৪ জনের মৃত্যু
প্রকাশিতঃ ০৪ নভেম্বর, ২০২১
জেলা প্রতিনিধি: নরসিংদীতে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন।
আজ বৃহস্পতিবার (০৪ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নেকজানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নিহতরা হলেন- নেকজানপুর গ্রামের কটুমিয়ার ছেলে আমির হোসেন (৪৫) একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে আশরাফুল (২২), আব্দুল মনু মিয়ার মেয়ে খুশি বেগম (৫০) ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও একজন। এরা সবাই আলোকবালী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু সমর্থক বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন- খায়রুল (২৮), বাদশা মিয়া (৩২), আবুল খায়ের (৪০), হানিফ (৪৫), আনিস মিয়া (৪২), আব্দুল লতিফ (৪৫), আহসানুল্লহ (২৬), শওকত মিয়া (২৪), আরিফ (২২), সনিয়া (১৭), মমিন আলী (৫৫), মাসুমা (২০), মকবুল হোসেন, আকাশ (১৪), জিয়াউর (৩৭), হাসেম (৪৮), মিজান ও বুলু (৫৫)। তাদের ঢাকাসহ নরসিংদীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোকবালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপুর সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুল্লাহর দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো।
এর জেরে কয়েকদিন আগে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। নির্বাচনে দেলোয়ার হোসেন দীপু পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। অন্যদিকে অ্যাডভোকেট আসাদুল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েও দলীয় নির্দেশে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। এনিয়ে বেশ কয়েকদিন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো।
তবে এ ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ করেছে একটি পক্ষ। তাদের অভিযো,গ হামলার আগেই পুলিশকে তথ্য দেওয়া হয়ছিল। তবে পুলিশ কর্ণপাত করেনি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদশী আলোকবালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মামুন হাসান বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে আমরা আগেই টের পেয়েছিলাম। তাই পুলিশকে জানিয়েছিলাম। তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশের জন্য আজকে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সক্রিয় থাকলে এই তিনটা লোক মারা যেত না।’
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় আমরা পুলিশকে ফোন দিয়েছি। কিন্তু তারা আসেনি। পুলিশ আসাদুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে তার বাড়ি পাহারা দেয়। কিন্তু আমাদেরকে বাঁচায়নি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, ‘পক্ষপাতিত্বের কোনো প্রশ্নই আসে না। একপক্ষ এ ধরনের অপপ্রচার কিংবা দোষারোপ করছে। নির্বাচন নিয়ে আমরা সব সময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।’
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদউল্লাহ বলেন, সংঘর্ষে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি দীপুকে সমর্থন জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি। কিন্তু দুই মেম্বার সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আমির হোসেন নামের আমার এক আত্মীয়ও মারা যান।
এ ব্যাপারে নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, ঘটনাস্থলে তিনজন ও ঢাকায় নেওয়ার পথে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ নরসিংদী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।