মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে হুমকি: নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি
প্রকাশিতঃ ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭
জেলা প্রতিনিধিঃ ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধাদেরকে যাচাই-বাচাইয়ের আওতায় আনার জন্য অভিযোগ করে বিপাকে পড়েছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার এক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। ওই মুক্তিযোদ্ধাকে তার অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য অব্যাহত ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে পরিবার-পরিজন আর নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবুল হোসেন। এনিয়ে শনিবার রাতে হাতীবান্ধা থানা সাধারণ ডাইরী (জি.ডি) করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোববার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বলেন, ‘১৯৮৭ সালে হাতীবান্ধায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১৪৯ জন। কিন্তু বর্তমানে অত্র উপজেলায় প্রায় ৩২৪ জন মুক্তিযোদ্ধা সরকারের দেয়া সম্মানি ভাতা তুলছে।’ সম্প্রতি সরকার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নে যাচাই-বাছাইয়ের ঘোষণা দেয়ায়। এতে শতাধিক ভাতা ভূক্ত মুক্তিযোদ্ধার নাম উল্লেখ করে তাদেরকে যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন আবুল হোসেন। আর তাই ওইসব মুক্তিযোদ্ধাকে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি,২০১৭) যাচাই-বাছাই কমিটির সামনে উপস্থিত হতে ইতোমধ্যে নোটিশ প্রদান করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমনটি জেনে সেইসব অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার একাংশ বেশ দৌঁড় ঝাপ শুরু করেন। এরই আলোকে গত দু‘দিন ধরে অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধার মুঠোফোনে বিভিন্ন নম্বর থেকে অব্যাহত হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, ‘বিভিন্ন নম্বর থেকে আমাকে বলা হচ্ছে অভিযোগ তুলে নিতে। নইলে আমার ও আমার পরিবারের যেকোন সদস্যের ক্ষতি করা হবে। শুধু তাই নয়, সোমবার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইকালে আমি উপস্থিত হলে আমার হাত-পা ভেঙে দেয়া হবে বলেও মুঠোফোনের মাধ্যমে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় আমি ও আমার পরিবারের লোকজন চরম নিরাপত্তাহীনতা ভুগছি।’ তাই বিষয়টি নিয়ে শনিবার রাতে হাতীবান্ধা থানায় সাধারণ ডাইরী (জি.ডি) করেছেন বলে জানান মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাতীবান্ধা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার ও যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করে বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ওই মুক্তিযোদ্ধা এনিয়ে হাতীবান্ধা থানায় জি,ডি করেছেন।
হাতীবান্ধা থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধকে হুমকি দেয়ার ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু সেখানে শুধু কয়েকটি মোবাইল নম্বর লেখা আছে। এখন ওই মোবাইল নম্বরগুলো কিভাবে খুঁজে বের করবো তাই ভাবছি।’
হাতীবান্ধা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ এনামুল কবির বলেন, বিষয়টি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন আমাকে কিছু বলেনি। তবে যেসব মুক্তিযোদ্ধা অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাদেরকে অবশ্যই যাচাই-বাছাইকালে বিষয়টি প্রমাণের জন্য উপস্থিত থাকতে হবে। এরপরেও অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।