আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা
প্রকাশিতঃ ২২ জানুয়ারি, ২০১৭
নিজস্ব প্রতিবেদকঃহে আল্লাহ, পুরো উম্মতের ওপর রহম কর, সব মানুষকে হেদায়েত দাও। হে আল্লাহ, পেরেশানি দূর করে দাও। হে আল্লাহ, ইজতেমাকে কবুল কর, আমাদের দোয়া কবুল কর।
অশ্রুসজল চোখে এমনি গভীর আকুতিপূর্ণ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রোববার শেষ হয়েছে তাবলিগ জামাতের ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা।
রোববার বেলা ১১টা ১২ মিনিটে শুরু হয়ে ১১টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত দীর্ঘ মোনাজাত পরিচালনা করেন দিল্লির মাওলানা মুহাম্মদ সা’দ।
প্রথম ১৫ মিনিট পবিত্র কোরআনে বর্ণিত দোয়ার আয়াতগুলো উচ্চারণ করেন তিনি। শেষ ১৫ মিনিটে উর্দু ভাষায় দোয়া করেন। এর আগে হেদায়েতী বয়ানও করেন মাওলানা সা’দ।
টঙ্গীর তুরাগতীরের ইজতেমা ময়দান ছাড়াও দক্ষিণে খিলক্ষেত, উত্তরে বোর্ডবাজার, পূর্বে টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরী ও পশ্চিমে আশুলিয়া পর্যন্ত প্রায় ১২ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিস্তৃত বিশাল জনসমুদ্রে ৩০ লক্ষাধিক মানুষের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন।
কেঁদে বুক ভাসিয়ে দুনিয়া ও আখিরাত, দেশ ও বিশ্বের কল্যাণ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন মুসল্লিরা। আত্মশুদ্ধি, গুণাহ মাফ ও সবক্ষেত্রে আল্লাহর রহমত চান তারা।
বাংলাদেশ ছাড়াও ৯৬ দেশের প্রায় ৬ হাজার বিদেশী মেহমান ইজতেমা ও আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সম্প্রচার, মুঠোফোন ও পুলিশের ওয়্যারলেসের বদৌলতেও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বহু মানুষ মোনাজাতে শরিক হন।
মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাত থেকেই মুসল্লিদের ঢল নামে। সূর্য উঠতে না উঠতেই কুড়িল-বিমানবন্দর-আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী-কালীগঞ্জ, আশুলিয়া-সাভার ও ঢাকা-ময়মসসিংহ সড়কসহ বিভিন্ন পথে হাজারও মানুষ হেঁটেই আসতে থাকেন ময়দানের দিকে।
এমনকি নারীরাও ভিড় ঠেলে হেঁটেই আসেন। মোনাজাতের সময় ইজতেমাস্থলের চারপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।
মিল-কারখানার ভেতর ও ছাদ, ঘরবাড়ি, বেড়িবাঁধ, বিভিন্ন যানবাহন এবং নৌকায় বসেও মোনাজাতে শরিক হন বহু মানুষ।
মোনাজাত শেষে হেঁটেই ফিরতে হয় এদের প্রায় সবাইকে। যে অল্প ক’জন মানুষ বাস, পিকআপ বা কোনো যানবাহনে উঠতে পেরেছেন তাদের গুণতে হয়েছে বহুগুণ বেশি ভাড়া।
আখেরি মোনাজাতের জন্য রোববার আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে ছিল ছুটি। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা না করলেও কর্মকর্তাদের মোনাজাতে অংশ নিতে বাধা ছিল না।
এর আগে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে শুরু করেন মাওলানা মুহাম্মদ সা’দ। তা বাংলা তরজমা করেন বাংলাদেশে মাওলানা ওমর ফারুক।
বয়ানে তিনি বলেন, যে দ্বীন ইসলামের বিধান অনুসারে চলবে এবং হজরত মুহাম্মদের (সা.) জীবনাদর্শ অনুসরণ করবে, সে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা অর্জন করবে।