ঝালকাঠিতে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ: বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
প্রকাশিতঃ ৩০ অক্টোবর, ২০১৬
জেলা প্রতিনিধিঃ গৃহকর্মীকে ধর্ষণের মামলায় ঝালকাঠি জেলা বিএনপির জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক কবির হোসেন জোমাদ্দারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। আজ রবিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রমনী রঞ্জন চাকমা এ আদেশ দেন।
আদালত ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১ এ মামলাটি দায়ের করেন নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের নির্যাতিত ওই গৃহকর্মী। আদালতের তৎকালীন বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. শফিকুল করিম নলছিটি থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নলছিটি থানায় মামলাটি লিপিবদ্ধ করা হয়। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া নলছিটি থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামানকে। তদন্তকালে ঝালকাঠির পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহার নির্দেশে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার এস এম মাহামুদ হাসান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে বিএনপি নেতা কবির হোসেন জোমাদ্দারের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। অবশেষে গত ২২ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আজ রবিবার অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য তারিখ নির্ধরণ করা হয়। আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে এ আদেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানাযায়, শুকতাঁরা ব্রিকসের মালিক ঝালকাঠি জেলা বিএনপির জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক কবির হোসেন জমাদ্দারের নলছিটির তালতলা গ্রামের প্রতিবেশী এক কৃষকের মেয়েকে ৪ বছর পূর্বে পড়াশুনার সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই মেয়েকে সে তার বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ দেয়। বর্তমানে মেয়েটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে। গত বছরের ২৭ জুলাই রাতে সে ওই বাড়িতে বসে লেখাপড়া করছিল। এ সময় কবির জমাদ্দার তাকে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে নিজের কক্ষে নিয়ে যায় এবং তাকে ধর্ষণ করে। এর পর থেকে বিভিন্ন সময় তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন কবির জোমাদ্দার। এ ঘটনা তার পরিবারের অন্য কারো কাছে না বলার জন্য চাপ দেয় সে। এমনকি কাউকে জানালে তার বাবা-মাকে হত্যা কারার হুমকি দেয় এই বিএনপি নেতা।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী ধর্ষিত গৃহকর্মী জানায়, এক পর্যায়ে সে অন্তসত্তা হলে কবির জোমাদ্দার জোর করে তাঁর গর্ভপাত ঘটায়। বিষয়টি জানাজানি হলে কবির জমাদ্দার তাকে রেজিষ্ট্রি না ছাড়াই বিয়ে করার প্রস্তাব তার বাবা-মাকে দেয়। কিন্তু তাকে বিয়ে না করেই ফের ধর্ষণ করে। তার মায়ের অসুখ শুনে দেখতে বাড়িতে আসে সে। সেখান থেকে আর কবির জোমাদ্দারের বাড়িতে ফিরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। এতে কবির জমাদ্দার ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে চুরির মিথ্যা মামলা করেছে বলে গৃহকর্মীর দাবি। ওই মামলায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি সে আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠায়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি সে জামিনে মুক্ত হয়।