বুধবার ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

দাফনের সময় নড়ে উঠলো নবজাতক

প্রকাশিতঃ ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬  

ফরিদপুর প্রতিনিধি : চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পর নবজাতককে দাফনের সময় নড়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার ফরিদপুর শহরের কমলাপুর এলাকায় এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ওই নবজাতক জন্ম নেবার কিছু সময় পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে দাফনের জন্য কবরস্থানে নেয়া হয়। দাফনের পূর্ব মুহুর্তে নড়ে উঠে শিশুটি। পরে দ্রুতই শিশুটিকে হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে ওই নবজাতককে শিশু হাসপাতালের ইনকিউবিটরে রাখা হয়েছে। এমন ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। চিকিৎসকের ‘অবহেলা এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন’ কর্মকাণ্ডের বিচার দাবি করেছেন তারা।
ফরিদপুর শহরের কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হোসেন মিঠুর স্ত্রী অ্যাডভোকেট নাজনীন আক্তার প্রসবজনিত ব্যথা নিয়ে বুধবার রাত ১১টার দিকে ফরিদপুরের বেসরকারি ডা. জাহেদ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা প্রসূতির তেমন একটা খেয়াল না রাখায় রাত ১টার দিকে নরমাল ডেলিভারি হয়। নাজনীন আক্তার একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এর কিছুক্ষণ পর শিশু হাসপাতালের কর্তব্যরত গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রিজিয়া আলম নবজাতকটিকে মৃত ঘোষণা করে। ওই রাতেই ‘নবজাতকের’ মরদেহ বুঝিয়ে দেয়া হয় পরিবারের স্বজনদের কাছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবারের সদস্যরা নবজাতকটিকে দাফন করার উদ্দেশ্যে আলীপুর কবরস্থানে দাফন করার প্রস্তুতি নিলে দাফনের পূর্ব মুহুর্তে নড়ে-চড়ে উঠে শিশুটি। সাথে সাথেই ওই নবজাতককে আবার নেয়া হয় শিশু হাসপাতালে। তাকে হাসপাতালের ইনকিউবিটরে নিবীর পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকদের এমন অবহেলায় হতবাক শিশুটির স্বজন ও স্থানীয়রা।
ওই নবজাতকের বাবা নাজমুল হোসেন মিঠু বলেন, মরদেহ দাফনের জন্য আলীপুর কবরস্থানে কবর খোঁড়া হয়। আলিপুর গোরস্থান মসজিদের ইমাম দাফনের সব আয়োজনও সম্পন্ন করেন। কিন্তু মরদেহের মাথা কোনদিকে আছে দেখতে গিয়ে চোখ ছানাবড়া হয়ে ওঠে দাফন করার কাজে নিয়োজিতদের।
আলীপুর কবরস্থানের কেয়ারটেকার বিল্লাল হোসেন বলেন, শিশুটির মরদেহের কাফনের কাপড় খুললে দেখা যায় সে জীবিত রয়েছে। এ সময় অন্যরাও শিশুটিকে জীবিত দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
এ ব্যাপরে ডা. রিজিয়া আলম বলেন, এ ব্যাপরে যা রিপোর্ট দেয়ার আমি অফিসে তাই দিয়েছি। এখন কোনো কথা বলবো না।
এ ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান শিশু হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদের সদস্য শওকত আলী জাহিদ।
হাসপাতাল থেকে মৃত ঘোষণার পর বেঁচে উঠার ঘটনায় শহরজুড়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটির বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
faridpur_child-450x300হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকদের এমন অবহেলায় আর যাতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেজন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই নবজাতকটির স্বজনরা। বিডি-প্রতিদিন