মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কসবায় অপহরণের তিনদিন পর গলাকাটা লাশ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫

প্রকাশিতঃ ০৮ মার্চ, ২০১৬  

নিজস্বপ্রতিবেদকঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় খাদিজা মণি ওরফে মিতু (৭) নামের এক স্কুল ছাত্রী অপহরণের তিনদিন পর সোমবার সন্ধ্যায় কসবা পৌর শহরের ইমামপাড়া বাবরু মিয়ার বহুতল ভবনের পঞ্চম তলা থেকে গলাকাটা লাশ উদ্ধার। সেখানে তাকে খুন করে বস্তায় বেঁধে বাথরুমের উপরে রাখা হয়। গত শনিবারের গ্রেপ্তার হওয়া রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আসামী মাসুক মিয়ার তথ্যমতে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। এ সময় আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে অপহরণ ও খুনের ঘটনায় পুলিশ ৫জনকে গ্রেপ্তার করেছেন।
খাদিজা মণি ওরফে মিতু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বাড়াই গ্রামের আল-আমিন মিয়ার মেয়ে। আল-আমিন মিয়া সৌদি আরবে চাকুরী করেন। কসবা পৌর শহরের শীতলপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন আল-আমিন মিয়ার স্ত্রী রুনা আক্তার ও তাঁর এক মেয়ে খাদিজা মণি ওরফে মিতু এবং দুই বছরের ছেলে আবদুল্লাহ। খাদিজা মণি ওরফে মিতু স্থানীয় কসবা ইমাম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী এবং স্থানীয় একটি মহিলা মাদরাসায় প্রতিদিন সকালে মক্তব পড়ত।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে; খাদিজা মণি ওরফে মিতু গত শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে একই ভবনে থাকা সহপাঠী মায়মুনা আক্তারকে সাথে নিয়ে বাসার কাছেই কসবা পৌর শহরের শীতলপাড়া এলাকার একটি মহিলা মাদরাসায় মক্তব পড়তে রওয়ানা করেন। একটু এগুয়ে গেলে একটি ছেলে খাদিজাকে মজা কিনে দেয়ার কথা বলে ডেকে নেয়। মায়মুনাকে মাদরাসায় চলে যেতে বলেন। পরে খাদিজা আর মাদরাসায় ফিরে যায়নি।
গত শনিবার সকাল আটটার দিকে খাদিজার মায়ের মুঠোফোনে মেয়েকে তুলে নেয়ার কথা বলেন। পরে তাকে ফিরিয়ে নিতে দেড় লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবী করেছেন। যদি পুলিশ বা অন্য কাউকে বিষয়টি জানানো হয় তাহলে মেয়েকে খুন করার হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় মেয়েটির মা গত শনিবার দুপুরে থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেছেন। রাতেই মাসুক মিয়া ও খাইরুলকে প্রধান আসামী করে একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন। রাতেই মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের লতুয়ামুড়া গ্রামের সমরাজ মিয়ার ছেলে মাসুক মিয়া (২০), আশিক মিয়া (১৬) এবং একই গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে খাইরুল মিয়া (১৯)কে গ্রেপ্তার করেন। গতকাল পুলিশ কসবার গোপীনাথপুর গ্রামের হোসেন সরকারের ছেলে কিবরিয়া (২৫)কে গ্রেপ্তার করেছেন।
গতকাল সোমবার (৭ মার্চ) গ্রেপ্তার হওয়া মাসুক মিয়া, আশিক মিয়া ও খাইরুল মিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত বিচারিক হাকিম মো. সফিকুল ইসলামের আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিকালে মাসুক মিয়াকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে লাশটি কসবা পৌর শহরের ইমামপাড়া এলাকার বাবরু মিয়া ভবনের পঞ্চম তলায় থাকার কথা পুলিশকে জানায়। পুলিশ তাদের স্বীকারোক্তি মতে ভবনের পঞ্চম তলা বাথ রুমের উপরে গলাকেটে খুন করে প্যাকেট করা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করেন। পুলিশ এ সময় ওই কক্ষে থাকা টাইলস মিস্ত্রি সিলেটের জকিগঞ্জের মুন্সিবাজার গ্রামের আবদুল সহিদের ছেলে তামিম মিয়া (২১)কে গ্রেপ্তার করেছেন।
রাতেই খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এস.পি) মো. মিজানুর রহমান পিপিএম, কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কসবা থানার উপপরিদর্শক (এস.আই) মো. মজিবুর রহমান সোনারবাংলা৭১.কমকে Khadija-Moni-249x450বলেন; আসামী মাসুকের স্বীকারোক্তিতে একটি পাঁচতলা ভবনের বাথ রুমের উপরে গলাকাটা প্যাকেট করা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরো দুইজন গ্রেপ্তার হয়েছে।