নারায়ণগঞ্জের ৫ খুনের ‘দায় নিয়ে’ ভাগ্নে মাহফুজের স্বীকারোক্তি
প্রকাশিতঃ ২২ জানুয়ারি, ২০১৬
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নিহত তাসলিমা বেগমের স্বামী শফিকুল ইসলামের ভাগ্নে মাহফুজ চার স্বজনকে শিল দিয়ে আঘাত করে এবং একজনকে দেয়ালে মাথা ঠুকে হত্যার কথা স্বীকার করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত ১৬ জানুয়ারি শহরের দুই নম্বর বাবুরাইল এলাকায় শফিকুলের বাড়িতে দুই শিশুসহ পাঁচজনকে হত্যার পর মাহফুজকে সন্দেহ করা হচ্ছিল। পরদিনই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামান শরীফের আদালতে মাহফুজ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এরপর সংবাদ সম্মেলনে এসে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, পাঁচজনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন মাহফুজ।
শফিকুলের বাসার তার স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৪০), ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), শ্যালক মোশাররফ হোসেন মোরশেদ (২৫) ও ছোট ভাই শরীফের স্ত্রী লামিয়াকে (২৫) হত্যা করা হয়।
ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসকরা জানান, তাদের শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
শফিকুলের বড় বোন আসিয়া বেগমের ছেলে মাহফুজ তার মামী লামিয়াকে যৌন হয়রানির চেষ্টা চালাতেন বলে স্বজনদের অভিযোগ।
এজন্য সম্প্রতি সালিশে তাকে জুতাপেটা করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তাকে সন্দেহের কথা জানিয়েছিলেন শফিকুল।
পুলিশ সুপার মহিদ উদ্দিন বলেন, “লামিয়ার সঙ্গে মাহফুজের সম্পর্ক ছিল। এ কারণে মামা শরীফ ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জে ভাড়া বাড়িতে চলে আসেন।”
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মহিদ উদ্দিন
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মহিদ উদ্দিন
হত্যাকাণ্ডের ১৬ দিন আগে লামিয়ার সঙ্গে ‘অনৈতিক সম্পর্কের’ কারণে পারিবারিক সালিশে মাহফুজকে জুতাপেটা করা হয়েছিল। সেই ক্ষোভে মাহফুজ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন বলে পুলিশ জানায়।
মহিদ উদ্দিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগের রাতে তাসলিমার বাড়িতে এসে লামিয়ার খাটের নিচে লুকিয়ে ছিলেন মাহফুজ। তা দেখে মোরশেদ তাকে বকাঝকা করে নিজের কক্ষে নিয়ে যান।
এরপর ভোররাতে মাহফুজ শিলনোড়া দিয়ে আঘাত করে একজনের পর একজনকে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
“রাত ৩টার দিকে প্রথমে ঘুমন্ত অবস্থায় মোরশেদকে রান্নাঘরের শিল দিয়ে মাথায় আঘাত দিয়ে হত্যা করে মাহফুজ। এরপর মামি তাসলিমা ও লামিয়া, মামাত বোন সুমাইয়াকে হত্যা করে। সকাল সোয়া ৭টার দিকে শান্তকে দেওয়ালে মাথায় আঘাত দিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে মাহফুজ। পরে ঘরে তালা দিয়ে কর্মস্থলে চলে যায় সে।”
হত্যাকাণ্ডের পর বাইরে তালা থাকায় বিষয়টি প্রকাশ পায়নি। ১৬ জানুয়ারি সারাদিন পেরিয়ে যাওয়ার পর রাতে পাঁচজনের লাশ পাওয়া যায়।