জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোনার একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ, পিস্তল ও গুলি উদ্ধার
প্রকাশিতঃ ০৮ জুন, ২০২৪
জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোণায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে সেখান থেকে বিদেশি পিস্তল, গুলি, ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ ও খেলনা একে-৪৭ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৮ জুন) দুপুর থেকে সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামের ওই বাড়ির চারপাশে অবস্থান নেন পুলিশ সদস্যরা। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ময়মনসিংহ থেকে আসা এন্টি টেরোরিজম ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে বাড়িটির ভেতরে ঢুকে প্রাথমিক অভিযান চালায়।
অভিযান শেষে নেত্রকোণার পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা একটা তল্লাশি করেছি। বাড়িটির ভেতরে কাউকে পাওয়া যায়নি। যেহেতু বিস্ফোরক থাকার সম্ভাবনা আছে তাই আমরা বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের জন্য অপেক্ষা করছি। তারা এলে আমরা আরও অধিকতর তল্লাশি করব।
এদিকে এমন ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসী। তারা বলছেন, বছর দুয়েক আগে এই বাড়িটি ভাড়া নেয় একটি পরিবার। কিন্তু কখনো কোনো কারণে তাদের মনে হয়নি যে এরা জঙ্গি হতে পারে। এই পরিবারের পুরুষ যারা মসজিদে নামাজ পড়তে আসত তারা সবার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করতো।
ডুয়েটের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মান্নানের বাড়ি এটি। তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামে। তবে তিনি সপরিবারে গাজীপুরে বসবাস করেন। দুই বছর আগে ফিসারী পরিচালনা করার জন্য আরিফ নামের এক ব্যক্তিকে তিনি এ বাড়িটি ভাড়া দেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ বেশ কিছুদিন যাবৎ বাড়িটির প্রতি নজরদারি করে আসছিল। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে পুলিশ শনিবার (৮ জুন) বেলা ২টার দিকে ওই বাড়িতে প্রাথমিক তল্লাশি চালায়। এ সময় একটি ভারতীয় পিস্তল ও ১৭ রাউন্ড গুলিসহ জঙ্গি প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বাড়ি থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ আসার খবর পেয়ে জঙ্গিরা হয়তো পালিয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, বাড়ির ভেতরে ব্যায়ামাগার, সাউন্ডপ্রুপ কক্ষ, বুলেট প্রুফ সরঞ্জাম থাকায় নিরাপত্তার জন্য এখনও চূড়ান্ত অভিযান চালানো হয়নি। ইতিমধ্যেই পুলিশের কাউন্টার এন্টি টেরোরিজম ইউনিট ও বোম ডিস্পোজাল টিমকে খবর দেওয়া হয়েছে। এসব ইউনিট আসলেই বাড়িতে চূড়ান্ত অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত উদ্ধারকৃত কোন কিছুরই ছবি প্রকাশ করেনি তারা।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে এন্টিটেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদুল্লাহ চৌধুরী পুলিশ সুপারকে নিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে বের হয়ে এসে সাংবাদিকদের জানান, তারা বাড়ির ভেতর একটি ব্যায়ামাগার, একটি সাউন্ড প্রুফ কক্ষ, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, হ্যান্ডকাফ, খেলনা এ কে ফোরটি সেভেন, বিভিন্ন ধরণের পিস্তল সহ নানা প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম পেয়েছেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটি একটি প্রশিক্ষণ শিবির। এছাড়াও বাড়ির মালিককে গাজীপুর থেকে বাড়িতে আসতে বলা হয়েছে। চূড়ান্ত অভিযান চালানোর আগ পর্যন্ত বাড়ির চারপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।