খাদ্যগুদাম দুই কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা ট্রাকসহ চাল জব্দ
প্রকাশিতঃ ০২ মে, ২০২৪
সোনার বাংলা ৭১ রিপোর্ট,নওগাঁর মহাদেবপুরে খাদ্যগুদামের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে ভালো মানের চাল বের করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের চাল গুদামে প্রবেশ করার অপরাধে মামলাটি করা হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় আরো দুই-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমদ বাদী হয়ে এই মামলা করেছেন।মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মাহমুদুর রহমান।
মামলার আসামিরা হলেন নওগাঁ শহরের খাস-নওগাঁ মহল্লার বাসিন্দা খাদ্যগুদামের খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম (৪৬), বদলগাছী থানার দ্বাড়িশন গ্রামের বাসিন্দা ও উপখাদ্য পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম (৪৯) এবং মহাদেবপুর থানার চকগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা খাদ্যগুদামের শ্রমিক সর্দার আজমের আলী (৫২)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মহাদেবপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাজের হাসান দুই বছর ধরে কর্মরত। গত ১৭ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলার ইউএনও কামরুল হাসান সোহাগ এলএসডির ১ নম্বর গুদামের দক্ষিণ পাশে একটি ট্রাক দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পান।এ সময় তিনি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাজের হাসানকে ফোনে ডেকে নেন। এরপর সেখানে উপখাদ্য পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম এবং আজমের আলীকে দেখতে পান। উক্ত ট্রাক থেকে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের ৩০০ বস্তা চাল ১ নম্বর গুদামের ১০৯/১০১১৫৫৬ নম্বর খামালে খামালজাত করা হয়েছিল। আর বাকি ১২০ বস্তা চাল গুদামজাত করার অপেক্ষায় ট্রাকের ওপরে ছিল।ইউএনও মোহাজের হাসানের কাছে গুদামের ভেতরে চাল ঢোকানোর জন্য কোনো সরকারি নির্দেশনা আছে কি না জানতে চান। তিনি সাফ জানিয়ে দেন এমন কোনো নির্দেশনা নেই।
এ বিষয়ে রাশেদুল ইসলাম ও আজমের আলী চালের বিষয়ে কোনো উত্তর দিতে পারেননি। খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনিও কোনো উত্তর দিতে পারেননি। তবে তার জ্ঞাতসারেই চালের বস্তাগুলো পরিবর্তন করা হচ্ছিল বলে জানা যায়।পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইউএনও নির্দেশক্রমে মোট ৪২০ বস্তা (প্রতিটি বস্তা ৩০ কেজি) চালসহ ট্রাকটি থানায় নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে ১ নম্বর গুদামটি সিলগালা করা হয়।
মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমদ বলেন, আতিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, আজমের আলীসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো দুই-তিনজন মিলে পরস্পর যোগসাজশে অধিক মুনাফার আশায় ভালো মানের চাল গুদাম থেকে বের করে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের চাল গুদামে ঢোকানোর চেষ্টা করছিলেন। অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে এমন কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত রাখা হবে বলে তিনি জানান।