জনসাধারণের চলাচলের প্রধান সড়কে কাদা-মাটির ভোগান্তি,ঘটছে দুর্ঘটনা
প্রকাশিতঃ ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩
বিশেষ প্রতিবেদন: আক্কেলপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এই মৌসুমের প্রথমেই শুরু হয়েছে অবৈধ মাটি ব্যবসা। পাশাপাশি এই উপজেলার সাথে লাগোয়া পার্শ¦বর্তী উপজেলার সীমানে থেকেও এই উপজেলায় প্রবেশ করছে ফসলী জমি ও পুকুরের কর্দমাক্ত কাদা মাটি। এতে জনসাধারণের চলাচলের প্রধান সড়কে পড়ে থাকছে এই সকল মাটি। বৃষ্টির পানিতে রাস্তার এই সকল মাটি কর্দমাক্ত হয়ে বেড়েছে ঝুঁকি,ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের পূর্ণ গোপীনাথপুর মাঠে ফসলী জমি, রত্নাহার গ্রামে অপরিকল্পিতভাবে গভীর করে পুকুর খনন, রায়কালী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানে চলছে পুকুর খনন এবং রুকিন্দিপুর ইউনিয়নের মাতাপুর মাঠের ফসলী জমি কেটে মাটি বিক্রয় করছে অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা।
এই সকল কাজে সর্বত্র ব্যবহার হচ্ছে অবৈধ বাহন ট্রাক্টর।বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় সরোজমিনে পূর্ণ গোপিনাথপুর তিন মাথায় আক্কেলপুর-বগুড়া ও আক্কেলপুর-ক্ষেতলাল সড়কে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টিতে ভিজে পুরো রাস্তা কর্দমাক্ত। যানবাহন চলাচলে বেগ পেতে হচ্ছে চালকদের। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে চলছে মোটরসাইকেল। পায়ে হেটে যেতেও কাদার কারণে দূর্ঘটনা এড়াতে সাবধানতা অবলম্বল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের পূর্ণ গোপীনাথপুর এলাকায় পাশর্বর্তী ক্ষেতলাল উপজেলার বারইল নলপুকুর গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম গত কয়েকদিন থেকে ভেকু দ্বারা মাটি কেটে এই এলাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা পরিচালনা করছিল। ওই মাটি রাস্তায় পড়ে বৃষ্টিতে পিচ্ছিল কাদায় পরিণত হয়। এই পিচ্ছিল কাদার কারণে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল, ট্রাক ও পিকাআপ দূর্ঘটনার কবলে পড়ে।
মাটরসাইকেল আরোহী শামীম হোসেন বলেন,‘রাস্তায় মাটি পড়ে ব্যাপক কাদার সৃষ্টি হয়ে বেশ ঝুঁকি পূর্ণ হয়েছে। আমি একটি ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে পিছলে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলাম। অতিসত্বর সড়কের কাদা গুলো অপসারন না হলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে’।
আরেক মাটরসাইকেল আরোহী আবু কালাম জানায়,‘ভোরে অন্ধারে যাওয়ার সময় আমি মোটরসাইকেল নিয়ে পিছলে রাস্তায় পড়ে যাই।
ওই সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল বাছেদ , কলেজ ছাত্র জাকারিয়া আকাশসহ আরো কয়েকজন জনসাধারণকে সাবধানে চলাচলের জন্য সতর্ক করে এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে একটি বার্তা দেন।
বিভিন্নভাবে মাটি ব্যবসায়ী ক্ষেতলাল উপজেলার বারইল নলপুকুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রত্নাহার গ্রামে পুকুর খনন কার্য পরিচালনাকারী মাটি ব্যবসায়ী ও গোপীনাথপুর ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিম বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে আমার কাজ বন্ধ রয়েছে। সড়কে পড়া আমার কাজের মাটি নিয়মিত অপসারণ করা হয়’।
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন,‘বেশ কয়েকদিন ধরে এই ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক দিয়ে মাটিবাহী ট্রাক্টর চলাচল করছিল। সড়কের মাটিগুলো অপসারণ করার জন্য তাদের বলা হয়েছিল। তারা সেটি অমান্য করায় দূর্ঘটনা ঘটছে। আবারও কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হবে’।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুরুল আলম বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে আমি অবগত হয়েছি। অতিশিঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।