মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বেহাল কাঁচা রাস্তা পাকা করার দাবি স্থানীয়দের 

প্রকাশিতঃ ১৮ অক্টোবর, ২০২৩  

বিশেষ প্রতিবেদন: শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় মাটির রাস্তায় চলাচলে বেশ ভোগান্তিতে আছে এলাকাবাসী। প্রায় তিন কিলোমিটারের বেহাল এই মাটির রাস্তাটি উপজেলার সখিপুর থানার চরসেনসাস ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়াার্ডে অবস্থিত। এ রাস্তা দিয়ে স্কুল, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ ৮টি কান্দির দৈনিক প্রায় ৫ হাজার লোকের যাতায়াত। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা-পানির সৃষ্টি হয় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে রাস্তাটি। রাস্তাাটিতে ইটের ছোঁয়া না লাগায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ৭ নং ওয়ার্ডের খায়েরপট্টি হতে নরসিংহপুর আবুল শেখের বাড়ি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তাটি প্রায় ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিকল্প পথের ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু সমান কাদা মাড়িয়েই চলাচল করতে হয় স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, বৃদ্ধসহ সবার। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয় তাদের। এ রাস্তাায় কাদার জন্য কোনো অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ভ্যান-রিক্সা প্রবেশ করতে করে না। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলে তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দায়। বৃষ্টির দিনে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সও এখানে ঢুকতে পারে না। অনেক সময় কেউ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সিকদার বলেন, ‘আমরা ঠিকমতো হাটবাজারে যেতে পারি না। কৃষিপণ্য সময়মতো বিক্রি করতে পারি না। আমাদের ছেলেমেয়েরা কষ্ট করে স্কুল-কলেজে যায়। বিশেষ করে বৃষ্টি-কাদার দিনে জুতা স্যান্ডেল হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এলাকায় প্রচুর কৃষি ফসল উৎপাদন হয়। কিন্তু এমন রাস্তার কারণে কৃষকরা সময় মতো পণ্য বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে সফলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তফা বেপারি বলেন, সামান্য বৃষ্টিতে কিছু এলাকায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়। এছাড়াও পাশের মাঠের সব ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি নিতে হয়। এ রাস্তা দিয়েই কৃষি পণ্য বাজারজাত করা হয়।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, সবাই মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ বিভিন্ন জনের কাছে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি।’

স্থানীয় দারুসসুন্নাত ছালেহীয়া দানীয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মো. এরশাদ আলী বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। জরুরি সেবার কোনো গাড়ি বা যেকোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। কেউ মারা গেলে কাঁদার কারণে সৎকার, দাফন-কাফনে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। রাস্তাটি পাকাকরণ এখন সময়ের দাবি।

৭নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাহজাহান বেপারী বলেন, রাস্তাটির স্কিম দেওয়া হয়েছে। আশাকরি খ্বু তাড়াতাড়ি এর একটা সমাধান হবে।

চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম আনোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় দীর্ঘদিন দুর্ভোগে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।

দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনার অবসান ঘটাতে রাস্তাটি পাকা করা প্রয়োজন। তিনি রাস্তাটি পাকা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষপ কামনা করেন।