সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ইউএনওর নামে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে গণপিটুনি খেলেন যুবদল নেতা

প্রকাশিতঃ ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  

সোনার বাংলা ৭১ রিপোর্ট,পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নামে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন শিশির (২৯)। শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শিশির উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও কোনাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাঁথিয়া উপজেলা শাখার স্বঘোষিত সমন্বয়ক ছাত্রদল নেতা শিশির শনিবার বিকালে মেয়াদোত্তীর্ণ কোকাকোলা বিক্রির অভিযোগ নিয়ে তার বন্ধু সানিকে (৩০) সঙ্গে নিয়ে ধোপাদহ বাজারের ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানের দোকানে যান। মেয়াদোত্তীর্ণ কোকাকোলা বিক্রি করায় ইউএনও তাদের পাঠিয়েছেন বলে দোকানিকে জানান। সেইসঙ্গে দোকানির ভাই রোকনুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে তারা মোটরসাইকেলযোগে ইউএনওর অফিসের দিকে যান। শিশির ও সানি উপজেলা চত্বরে এসে ইউএনওর কাছে না গিয়ে কৌশলে রোকনুজ্জামানকে উপজেলা পরিষদের পুকুর পাড়ে নিয়ে যান। এ সুযোগে কোনাবাড়িয়া গ্রামের শাকিল (৩২) ও তালহা (২৫) তাদের সঙ্গে ছিলেন। তারা রোকনুজ্জামানকে গিয়ে বলেন ইউএনওর কাছে গিয়েছিলাম। ইউএনও দুই লাখ টাকা জরিমানা করবে বলে জানিয়েছেন। জবাবে রোকনুজ্জামান বলেন, আমার কাছে এত টাকা নেই। কি করবো? তখন শিশির বলেন এক লাখ টাকা দিয়ে চলে যা, তাহলে তোর এক লাখ বাঁচবে। ইউএনও আসলে কিন্তু দুই লাখ টাকাই দিতে হবে। ওই অবস্থায় কোনও রকমে রোকনুজ্জামান ভয়ে ৬০ হাজার টাকা তাদের দিয়ে চলে যান। 

বিষয়টি জেনে দোকানদার মনিরুজ্জামান থানা ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন। কেন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, তা জানতে পুনরায় মনিরুজ্জামানকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য শিশির ও সানি ধোপাদাহ বাজারে যান। তখন মনিরুজ্জামানকে ভয়ভীতি দেখানোর সময় শিশিরকে ধরে গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। এ সুযোগে সঙ্গে থাকা সানি কৌশলে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা তাকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। একপর্যায়ে চাঁদা নেওয়া ৬০ হাজার টাকা পুলিশের কাছে ফেরত দেন শিশির।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে চার জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আটক শিশিরকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার নামে চাঁদাবাজি করে জঘন্য অপরাধ করেছে তারা। আমার নামে যদি কেউ চাঁদা দাবি করে তাহলে কেউ চাঁদা দেবেন না এবং আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’