সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বসতভিটা

প্রকাশিতঃ ১৬ আগস্ট, ২০২৪  

অনলাইন ডেস্ক:প্রখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের রাজশাহীর পৈতৃক বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নগরীর ঘোড়ামারা মহল্লার মিয়াপাড়ায় অবস্থিত এই বাড়ির আঙিনায় এখন শুধুই ইটের স্তূপ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সাংস্কৃতিককর্মীরা। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন।

জীবনের শুরুর সময়টা রাজশাহীর এই পৈতৃক বাড়িতে কাটিয়েছেন ঋত্বিক ঘটক। এখানে থেকে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়েছেন তিনি। রাজশাহী কলেজ ও মিঞাপাড়ার সাধারণ গ্রন্থাগার মাঠে কালজয়ী কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে নাট্যচর্চা করেছেন। ওই সময় ‘অভিধারা’ নামে সাহিত্যের কাগজ সম্পাদনা করেন ঋত্বিক। এ বাড়িতে থেকেছেন ঋত্বিক ঘটকের ভাইঝি বরেণ্য কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী।

জানা যায়, এই বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি ১৯৮৯ সালে এরশাদ সরকার রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজকে ইজারা দেয়। এরপর জায়গাটির উত্তরে গড়ে তোলা হয়েছে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের আধুনিক ভবন। এ ভবনের দক্ষিণ অংশে ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতিবিজড়িত পুরনো বাড়ির ঘরগুলো দাঁড়িয়ে ছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর শিক্ষার্থীদের ওপর দোষ চাপিয়ে হোমিওপ্যাথিক কলেজ কর্তৃপক্ষ পুরনো স্থাপনাগুলো ভেঙে ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজশাহীর সাংস্কৃতিককর্মীরা সরব হয়ে উঠেন। 

এ দিকে ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক বাড়ি ভাঙা বন্ধ ও সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে যুবসংগঠন ‘ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাস’। বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে সংগঠনের পক্ষে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।  

এ বিষয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা তাওকীর ইসলাম শাইক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা গত রাতে ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি ভেঙে ফেলার খবর পাই। এসে দেখি সব ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমরা আগেও দেখেছি, কলেজ কর্তৃপক্ষ এটা ভাঙার পাঁয়তারা করেছে। তারা এ সুযোগে ভেঙে ফেলল। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়েছি। আমরা দেখব, এটা কারা ভেঙেছে। যদি কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাঙে তাহলে অধ্যক্ষকে পদত্যাগ করতে হবে।’

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, ‘এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। সেটি দেখা হচ্ছে। যারা এই বাড়ি ভাঙায় জড়িত থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা সংরক্ষণের জন্য যা করা প্রয়োজন, তা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে করা হবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।