সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

মাটি চক্রের থাবায় বাঁধে ক্ষত

প্রকাশিতঃ ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪  

বিশেষ প্রতিনিধি, গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালী নদীর তীর ও রক্ষা বাঁধের মাটি কেটে নিচ্ছে স্থানীয় একটি মাটি ব্যবসায়ী চক্র। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে উপজেলার বিশাল এলাকা বন্যার কবলে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া কাটাখালী নদীর ভাঙনরোধসহ আবাদি জমির ফসল রক্ষার জন্য দক্ষিণ পাশে নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে সেখানকার কয়েক হাজার একর জমির ফসল বন্যায় নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় আছেন কৃষক।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি চক্র প্রতিদিন নদীর পাড় ও বাঁধের মাটি কেটে নিচ্ছে। এ পর্যন্ত শতাধিক বিঘা জমির ওপরের মাটিও কেটে নিয়েছে তারা। এ অবস্থায় নদী পাড়ের বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে আছেন।
কাটাখালী নদীর তীরবর্তী ফুলবাড়ী ইউনিয়নের সাবগাছি হাতিয়াদহ নামক স্থানে বোয়ালিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১ হাজার মিটার বাঁধের মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই এলাকার ফসলি জমির মাটিও কেটে নিয়ে গেছে মাটিখেকো চক্র। এখনও প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার ঘনফুট মাটি ওই এলাকা

থেকে ডাম্প ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যার বাজার মূল্যে প্রায় ৭ লাখ টাকা।
ওই এলাকার মোনতাজ রহমান জানান, সরকার জনগণের জন্য যেখানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে, সেই বাঁধই আবার ক্ষমতাসীন দলের নেতারা অবৈধভাবে কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ এসব নিয়ে তাদের বলার কেউ নেই। বর্ষায় এর পরিণতি ভয়াবহ হবে।
পরিবেশ আন্দোলন গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জনি জানান, মাটি কাটাসহ বালু উত্তোলন পরিবেশ এবং জনজীবনের জন্য হুমকি। অতিমাত্রায় বালু উত্তোলনসহ মাটি কাটা জলপ্রবাহ কমিয়ে নদীর ক্ষয় বাড়িয়ে তুলছে। যার কারণে দিন দিন নদীর পাড়ের ভাঙন বাড়ছে। এতে নদীর আশপাশের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, সেতু, ফসলি জমি ইত্যাদি হুমকির মুখে পড়ছে।
এদিকে মাটি কাটার মূল হোতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান জানান, একজনের কেনা মাটি তিনি নিয়ে যাচ্ছেন। এ মাটি তিনি কেনেননি। অন্য এক ব্যক্তির মাটি পরিবহনে তিনি শুধু সহযোগিতা করছেন।
তবে আতিকের সহযোগী ছানোয়ার হোসেন ছানা জানান, সবাইকে ম্যানেজ করেই মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জোর করে কিছুই করা হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আব্দুল্লাহ-বিন-শফিক জানান, অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। রাতে তারা এ অপকর্ম করে। হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশ সহায়তা করলে দোষীদের ধরা সহজ হতো।