সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

রাত নামলেই অবাধে বিক্রি হয় বড়ালের মাটি

প্রকাশিতঃ ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪  

বিশেষ প্রতিনিধি, নাটোরের বড়াইগ্রামে অবাধে বিক্রি হচ্ছে সরকারিভাবে খনন করা বড়াল নদীর মাটি। অনুমতি না থাকলেও এ মাটি বিক্রি করে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। দুই সপ্তাহ ধরে নদীর নটাবাড়িয়া অংশে প্রকাশ্যে শত শত ট্রাক্টর মাটি বিক্রি হলেও নীরব ভূমিকা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে মাটি বিক্রেতাদের দাবি, জেলা-উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই তারা এ কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বড়াল নদী খনন করা হয়। সে সময় নদীর দুই পাড়সহ আশপাশের জমিতে খননের মাটি রাখা হয়। এসব জমির মালিকরা উঁচু মাটির ঢিবীর উপরেই কলাবাগানসহ বিভিন্ন গাছপালা রোপণ করেছেন। বিক্রির সুযোগ না থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা এ মাটি গাড়িপ্রতি এক হাজার থেকে তেরশ টাকা দামে বিক্রি করছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত মাটি সরানোর কাজ করছে দুটি এক্সকেভেটর (ভেকু মেশিন)। এরপর ট্রাক্টরে করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে সেগুলো। এভাবে প্রতি রাতে অন্তত ২০০-২২৫ গাড়ি মাটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর পাড়ে দুটি এক্সকেভেটর রাখা হয়েছে। অন্ধকার হলেই মাটি কাটা শুরু করবে এগুলো। ইতোমধ্যে বড়াল নদীর ব্রিজ থেকে জোয়াড়ী বাজারের দিকে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকার মাটি কেটে বিক্রি করে দিয়েছে মাটিখেকোরা।

সেখানে মাটি বিক্রির দায়িত্বে থাকা আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে জানিয়েই আমরা মাটি বিক্রি করছি। তবে নদী খননের মাটি বিক্রির এখতিয়ার তাদের আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। 

তিরাইল গ্রামের সোহেল রানা ও শফিকুল ইসলাম জানান, আমরা প্রতি গাড়ি মাটি ১২শ’ টাকা দামে কিনে নিয়েছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, বাড়ির পাশেই নদী, অথচ এ মাটি আমাদেরকে নগদ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। 

মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত এক্সকেভেটর মালিক উপজেলার চকপাড়া গ্রামের বাবু জানান, ডিসি, ইউএনও, ওসি সবার অনুমতি নিয়েই মাটি কাটা হচ্ছে। বিষয়টি সবাই জানে। এ সময় তিনি নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করে এ প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বোরহান উদ্দিন মিঠু জানান, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আর নদী খননের মাটি কোন ব্যক্তিকে বিক্রির অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। আমি খোঁজ নেওয়াসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।