মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ দুই সন্তানের জননী অবশেষে চলে গেলেন

প্রকাশিতঃ ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩  

নিজস্ব প্রতিবেদক, দুই শিশুসন্তানের পর লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার বশিকপুর গ্রামে বসতঘরে স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার মুন্নিও চলে গেলেন। শনিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

সন্ধ্যায় বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম।

তিনি জানান, গত ২৮ নভেম্বর ভোরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের চতল্লা বাড়ির অটোরিকশাচালক মাদকাসক্ত কামাল হোসেন তার বসতঘরে আগুন দেয়। এতে স্ত্রী ও দুই সন্তান দগ্ধ হয়। ঘটনার রাতে মৃত্যু হয় সাত বছর বয়সী শিশুকন্যা আয়েশা আক্তার মুনতাহার। পরদিন মারা যায় শিশুপুত্র আবদুর রহমান মুনতাসির।

এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করে। পরে দায় স্বীকার করে ওই দিন বিকালে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। ঘটনার দুই দিন পর সুমাইয়া আক্তার মুন্নির বাবা বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় কামাল হোসেনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করে মামলা করেন।

বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘কামাল হোসেনের সঙ্গে তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহ চলছিল। স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে একটি সেমিপাকা টিনশেড ঘরে থাকতেন তিনি। গভীর রাতে স্ত্রী এবং দুই সন্তান ঘুমিয়ে গেলে কামাল ঘরের বাইরে এসে দরজা বন্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মেয়ে আয়েশা আক্তার মারা যায়। স্ত্রী সুমাইয়া ও শিশুপুত্র আবদুর রহমানকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে ইউনিয়ন পরিষদের অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। ওই দিন দুপুরের দিকে শিশু আবদুর রহমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আজ দুপুরে তাদের মা সুমাইয়া আক্তারও মারা যান।’

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘মরদেহ এখনও নিয়ে আসা হয়নি। শুনেছি ওই হাসপাতালেই তার ময়নাতদন্ত হবে। এরপর গ্রামের বাড়িতে জানাজা হবে। সুমাইয়ার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার মান্দারীতে।’

পোদ্দার বাজার পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার দুই দিন পর ৩০ নভেম্বর সুমাইয়ার বাবা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে তার জামাতা কামাল হোসেনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুই জনের নামে হত্যা মামলা করেছেন। ওই মামলায় কামাল এখন কারাগারে আছে।’