মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ঘুষ নেয়ার অভিযোগে দ্বিতীয়বার স্থগিত নিয়োগ পরীক্ষা

প্রকাশিতঃ ১৮ নভেম্বর, ২০২৩  

অনলাইন প্রতিবেদক: নেত্রকোনার বারহাট্টায় উজানগাঁও মনাষ উচ্চ বিদ্যালয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দেয়া হচ্ছিল নিয়োগ। এমন অভিযোগে দুইবার স্থগিত করা হয় নিয়োগ পরীক্ষা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা শিক্ষা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গফুর। গত ৯ই নভেম্বর স্কুলের পাঁচ পদে নিয়োগে ব্যাপক বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। উপজেলার নয়ন মিয়া ও সন্ধ্যা রানী নামে দুইজন ওই অভিযোগ দেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। জানা যায়, ৫-৬ মাস আগেও স্কুলে এসব পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল। সে সময় চাকরি প্রার্থীদের কাছে থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে স্থানীয় এক ব্যক্তি মামলা করার পর নিয়োগ স্থগিত করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ই অক্টোবর আবারো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়।

এবারো নিয়োগের জন্য ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে। ফলে নিয়োগ পরীক্ষাটি স্থগিত করে পুনরায় তদন্ত শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আয়া ও নিরাপত্তা প্রহরীসহ পাঁচ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত ১০ই অক্টোবর। ১২ই অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। অভিযোগ থেকে জানা যায়, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে অগ্রিম ঘুষ নিয়ে নিয়োগের চেষ্টা করছেন। তারা ঘুষ নিয়ে পছন্দের লোকজনকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করানোর পরিকল্পনা ঠিক করে রেখেছেন। ঘুষ নিয়ে প্রার্থীদের সঙ্গে দরদামের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ায় নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তাই নিয়োগ কার্যক্রমে নিরাপদ প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও নিরাপদ সংরক্ষণ করাসহ যথাযথ সুষ্ঠু পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাভিত্তিক স্বচ্ছ নিয়োগের আহ্বান জানান দুই ব্যক্তি। এ বিষয়ে দুই ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের পর কর্তৃপক্ষ ফের পরীক্ষা স্থগিত করেছেন। এ বিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ. ছাত্তার বলেন, যাদের নিয়োগ দেয়া হবে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে সিলেক্ট করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়টা এলাকার সবাই জানে। ৫-৬ মাস আগেও একবার ওই পদগুলোতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল। তখনও অগ্রিম ঘুষ নেয়ার অভিযোগে পরীক্ষা স্থগিত হয়েছিল। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল আমিন পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে, পরবর্তীতে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে আর ফোন রিসিভ করেননি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. শামছুল হক বলেন, পরীক্ষা স্থগিত হয়নি আমরা স্থানান্তরিত করেছি। তদন্তের পরে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গফুর বলেন, এর আগেও একবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে সেটি বাতিল করা হয়েছে। এবারো একই রকম অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্কুলে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ কোনো কর্মচারী নেই। নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।