সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

স্ত্রীর পরকীয়ায় শাশুড়িকে হত্যা

প্রকাশিতঃ ০৮ নভেম্বর, ২০২৩  

অনলাইন ডেস্ক:

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে ক্ষোভ থেকে শাশুড়িকে হত্যা করেছে জামাই। এরই প্রেক্ষিতে মেয়ের জামাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে চিন্তা ঋষির (৬৫) মরদেহ তার নিজ বাসার সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে পুলিশ ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন করেছে। এ ঘটনায় মূল আসামি মুকুল চন্দ্র রায় ও তাকে সহায়তাকারী মহানন্দ নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্‌) তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রায় ৬ থেকে ৭ বছর আগে চিন্তা ঋষির মেয়ে রেনু ঋষির সঙ্গে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম এলাকার মৃত খগেশ্বর রায়ের ছেলে মুকুল চন্দ্র রায়ের সঙ্গে। বিয়ের পর রেনু জানতে পারে, তার স্বামীর আগের স্ত্রী রয়েছে। এতে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয় এবং রেনু তার স্বামীকে তালাক দিয়ে মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। এরপর আবার সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে রেনু ও মুকুল একসঙ্গে থাকতে শুরু করে।

একপর্যায়ে রেনু কাজের উদ্দেশ্যে গাজীপুরে যায়।সেখানে আল আমিন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি রেনুর স্বামী মুকুল জানতে পারায় দু’জনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সম্প্রতি রেনু আল আমিনকে নিয়ে তার মায়ের বাসায় বেড়াতে আসে। বিষয়টি জানতে পেরে তাদের হাতেনাতে ধরতে মুকুল চিন্তা ঋষির বাসায় আসে। এদিকে মুকুল আসার আগেই রেনু ও আল আমিনকে কৌশলে ভাগিয়ে দেয় চিন্তা ঋষি। এই ঘটনায় চিন্তা ঋষি মেয়েকে সমর্থন করায় শাশুড়ি ও জামাইয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে ফোনে রেনুকে ও তার মাকে হত্যার হুমকি দেয় মুকুল। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩০শে অক্টোবর সকাল অনুমানিক ৮টার সময় চিন্তা ঋষির বাড়িতে আসে মুকুল। দুপুরে ও রাতে খাওয়া-দাওয়া করে রাতে মুকুল চন্দ্র রায় শ্বশুরবাড়িতেই থাকে।

 মুকুল পূর্ব দিকের ঘরের বিছানায় এবং চিন্তা ঋষি পূজা করার ঘরের বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে। ওইদিন দিবাগত রাত আনুমানিক রাত সাড়ে ১২টা থেকে রাত ১টার সময় মুকুল তার শাশুড়ির ঘরে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় চিন্তা ঋষির শ্বাসনালী কেটে দেয় এবং বুকে ও পেটের ডান দিকে কোপ দেয়। শাশুড়ির মৃত্যু নিশ্চিতের পর মুকুল বাসার সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ও রক্তে ভেজা কাঁথা ফেলে দিয়ে মাটিচাপা দেয়। একইসঙ্গে পূজার ঘরের মেঝে লেপে দেয়। এরপর ভোর ৪টার দিকে মুকুল জলঢাকায় নিজ বাসায় ফিরে যায়। এই ঘটনায় মঙ্গলবার বৃদ্ধার মেয়ে রেনু ঋষি বাদী হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। উল্লেখ্য, গত ৬ দিন থেকে চিন্তা ঋষি নিখোঁজ ছিলেন। গতকাল বৃদ্ধার নাতি জীবন এবং সৎ ছেলে নেপাল ঋষি দুপুরে বাসায় এসে দেখতে পান সেপটিক ট্যাংকের আশপাশের মাটি আলগা। এরপর তারা বিষয়টি পুলিশকে জানালে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।