মঙ্গলবার ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশকে মেরে কানের পর্দা ফাটাল ভাইস চেয়ারম্যানের ভাগিনা

প্রকাশিতঃ ০১ নভেম্বর, ২০১৬  

জেলা প্রতিনিধিঃ a_104940ভুয়া চিকিৎসা সনদ দিতে চিকিৎসক রাজি না হওয়ায় চিকিৎসককে গালাগালি করতে নিষেধ করায় পুলিশ সদস্য মো. সেলিম মাতুব্বর (৪২) কে মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দিয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যানের ভাগিনা। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত সেলিম মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সাতকরিয়া গ্রামের মৃত. আব্দুর ছাত্তার মাতুব্বরের ছেলে।
সদর হাসপাতাল ও পালং থানা সূত্র জানায়, আক্তার হোসেন ঢালী (২৭) তার মামা শরীয়তপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন হাওলাদারের নির্দেশে সদর হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক দেবাশীষ সাহাকে তাদের ইচ্ছেমত একটি চিকিৎসা সনদ দিতে বলে। তাদের পছন্দমত চিকিসা সনদ দিতে রাজি না হওয়ায় আক্তার হোসেন ঢালী ডা. দেবাশীষ সাহাকে অশ্লীল ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এ সময় চিকিৎসা নিতে আসা বুকে প্যাসমেকার বসানো পুলিশ সদস্য সেলিম মাতুব্বর চিকিৎককে গালাগালি করতে নিষেধ করেন। তখন আক্তার চড়াও হয়ে সেলিমকে ডান কানে চড় মারলে ফ্লোরে পড়ে যায়। পরে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হোসাইন খান, জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন ও শরীয়তপুর সিভিল সার্জন মো. মসিউর রহমান টগর আহত সেলিম মাতুব্বরকে সদর হাসপাতালে দেখতে আসেন।
মো. সেলিম মাতুব্বর বলেন, পুলিশ লাইনের চিকিৎসক ডা. মনিরুল ইসলাম আমাকে ডা. দেবাশীষ সাহার নিকট পাঠায়। আমার উপস্থিতিতে ডা. দেবাশীষ সাহা তাদের মত করে চিকিৎসা সনদ দিতে অস্বীকার করায় তাকে আক্তার অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। আমি তাকে গালাগালি না করার কথা বললে সে আমাকে কানের ওপর চড় মারতে শুরু করে। আমি ফ্লোরে পড়ে যাই।
ডা. দেবাশীষ সাহা বলেন, আমি আমার রুমে বসে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে আমার কক্ষে আক্তার হোসেন ঢালী ৩-৪জন লোক নিয়ে ঢোকে। ঢুকেই সদর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের হোসেন খন্দকারের নামে একটি অনৈতিক চিকিৎসা সনদ দিতে বলে। আমি দিতে অস্বীকার করলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। পুলিশ সদস্য সেলিম গালাগালি করতে নিষেধ করলে তার কানের ওপর চড় মারতে শুরু করে। সেলিম ফ্লোরে পড়ে যায়। তখন আক্তার তার লোকজন নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায়। আমরা তাকে তাৎক্ষণিক ভর্তি করি এবং কানের ডাক্তার দেখাই। ডাক্তার জানিয়েছে, তার কানের পর্দা ফেটে গেছে। আমরা তাকে ঢাকা মেডিক্যালে রেফার করেছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা ৮ জন ডাক্তার মিলে পালং মডেল থানায় আলমগীর হোসেন হাওলাদার, আক্তার হোসেন ঢালী ও জাগরনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ প্রসঙ্গে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন হাওলাদার বলেন, আমার ভাগিনা আক্তার যদি অপরাধ করে তা হলে তার আইনগত বিচার হবে।
এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, কয়েকজন চিকিৎসক আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।