ফুল চাষে বেকার যুবকদের ভাগ্য পরিবর্তন
প্রকাশিতঃ ২৩ জানুয়ারি, ২০১৬
নিজস্ব প্রতিবেদকঃফুলের প্রতি অদম্য ভালবাসা থেকে এর বাণিজ্যিক চাষে নিজেদের সফল চাষি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মাগুরার মোবাশ্বের আলী উজ্জল, আজিজ, মাহাতাবসহ বেশ কয়েকজন বেকার যুবক। তাদের হাত ধরেই মাগুরায় এই প্রথম বারের মতো শুরু হয়েছে ফুলের বাণিজ্যিক চাষ।
সদর উপজেলার শিবরামপুর, বেলনগর, ধলহারা গ্রামে প্রায় দুই হেক্টর জমিতে এবছর বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হয়েছে। এ ফুল চাষ দেখে এখন অনেকেই বিদেশ যাওয়া থেকে বিরত হয়ে এ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
মাগুরার মাটি ও আবহাওয়া ফুল চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার ফুলের আকার, কালার ও সুভাষ ভালো হয়। বর্তমানে মাগুরার ফুল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
Flower
ফুল চাষি মাহাতাব জাগো নিউজকে জানান, ফুলের প্রতি তার ছেলেবেলা থেকেই অদম্য ভালবাসা রয়েছে। যা থেকেই তিনি ফুল চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। প্রথমে ২০১৪ সালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ফুল চাষের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে গত মৌসুমে তারা ৪০/৫০ শতক জমিতে গাঁদা ফুলের চাষ শুরু করেন। যা থেকে খরচ বাদে প্রথম বছরেই ভালো লাভ হয়। যে কারণে ফুল চাষের প্রতি তাদের আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। এ বছর স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নতুন করে আরো জমিতে এ চাষ সম্প্রসারণ করেছেন।
বেশ কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গোটা মাঠ জুড়ে বিভিন্ন জাতের জারবারা, গাঢ় ও সাধারণ হলুদ জাতের গাঁদা ফুলের সমারোহ। সেখানে কাজ করছে বেশ কিছু অভিজ্ঞ বাগান শ্রমিক। চাষ দেখে এলাকার অনেকেই এখন এই চাষের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
ফুল চাষি আজিজ জাগো নিউজকে বলেন, ইতিমধ্যে তিনি লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। এ বছর প্রতিটি বাগান থেকে কমপক্ষে তিন লাখ টাকার ফুল বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন। আগামী বছরে এই চাষ আরো সম্প্রসারণ করবেন বলেও জানান তিনি।
Flower
তবে ফুল চাষিরা জানান, স্থানীয় বাজার না থাকায় ও ফুল পরিবহনের জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়া মাগুরাসহ এ অঞ্চলে ফুলের বড় বাজার ঢাকা। ঢাকায় ফুলের চালান পাঠালে অনেক সময় দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে যানজটের কারণে তা নষ্ট হয়ে যায়।
এদিকে, ফুল চাষের পিছনে প্রধান উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেছেন মাগুরা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুব্রত কুমার চক্রবর্তী। তিনি জাগো নিউজকে জানান, এ অঞ্চলের ফুলের বাণিজ্যিক চাষ নেই। সে কারণেই কৃষকদের উদ্যোগী করে তোলা হচ্ছে।
যা ভবিষ্যতে আরো সম্প্রসারিত হবে। তবে সেজন্যে স্থানীয় বাজার তৈরি ও ফুলের পরিবহন ব্যবস্থা সহজ করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।